বামের চক্ষুসুর এর আগে একাধিকবার সমলোচনার স্বীকার হতে হয়েছে আদানিকে। সেই বাম রাজ্যেই আগামী পাঁচ বছরে ৩০,০০০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে আদানি।
আদানি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর করণ আদানী শুক্রবার কেরালার ইনভেস্ট কেরালা গ্লোবাল সামিট ২০২৫-এ ঘোষণা করেছেন যে, আদানি গ্রুপটি আগামী পাঁচ বছরে কেরলে ৩০,০০০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগ কেরালার অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।
করন আদানি বলেছেন, “মোটকথা, অদানি গ্রুপ আগামী পাঁচ বছরে কেরলে ৩০,০০০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।” তিনি উল্লেখ করেছেন যে, আদানি গ্রুপটি কেরালাকে একটি প্রধান লজিস্টিক্স এবং পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অন্যদিকে, আদানি গ্রুপ ইতিমধ্যেই বিশিজনাম বন্দর প্রকল্পে ৫,০০০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে এবং আরও ২০,০০০হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশিজনাম হচ্ছে ভারতের প্রথম ট্রান্সশিপমেন্ট হাব, যা ভারতের শিপিং খাতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটির কৌশলগত অবস্থান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত শিপিং রুটগুলির মধ্যে একটি হিসেবে গড়ে তুলছে। করণ আদানি আরও বলেছেন, “বিশিজনাম হবে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট, যা ভারতের বাণিজ্যিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
বিশিজনাম বন্দরের সাফল্য উদযাপন করে তিনি উল্লেখ করেছেন, “বিশিজনাম বর্তমানে ভারতের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে ভারতকে বৈশ্বিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক হবে। এই বন্দরটি ইতিমধ্যে ভারতের উপকূলে পৌঁছানো সবচেয়ে বড় কন্টেনার ভাসমান জাহাজটিকে ডক করেছে, যার ধারণক্ষমতা ছিল ২৪,০০০ কন্টেনার।”
অদানি গ্রুপ কেরলে আরও কিছু উল্লেখযোগ্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে। এর মধ্যে রয়েছে ত্রিবান্দ্রম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির সম্প্রসারণ, যা বর্তমানে ৪.৫ মিলিয়ন যাত্রী ধারণক্ষমতা থেকে বাড়িয়ে ১২ মিলিয়ন যাত্রী ধারণক্ষমতা করা হবে। এর জন্য ৫,৫০০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
এছাড়াও গ্রুপটি কোচিতে একটি লজিস্টিক্স এবং ই-কমার্স হাব স্থাপন করবে এবং কোচির সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়াবে। করণ অদানি এ বিষয়ে বলেছেন, “আমরা কেরালার শিল্প এবং অবকাঠামোর অগ্রগতির জন্য আমাদের শক্তিশালী সমর্থন প্রদান করছি।”
আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বলেছেন, “ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টর হচ্ছে জাতির জন্য সম্পদ তৈরি এবং জাতি গঠনের কাজে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।” তিনি আরও বলেন, কেরালার জন্য তাদের পরিকল্পনা কেবল একটি উন্নত অবকাঠামো তৈরি করা নয়, বরং রাজ্যের অর্থনীতির সামগ্রিক বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
আদানি গ্রুপের এই বড় বিনিয়োগ কেবল কেরালারই নয়, দেশের জন্য একটি মাইলফলক হবে, যা দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং শিল্প ক্ষেত্রের শক্তিশালীতাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।