আইটিএটির রায়ে স্বস্তি গৃহক্রেতাদের, ধারা 50C থেকে মুক্ত ক্ষতিপূরণ

ITR Filing: Paying income tax for the first time? Step-by-step process to register on e-filing portal

মুম্বই বেঞ্চের ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল (ITAT) এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে ঘোষণা করেছে যে ফ্ল্যাট নির্মাণ বা হস্তান্তরে বিলম্বের কারণে ক্রেতাকে প্রদত্ত ক্ষতিপূরণকে আয়কর আইনের ধারা ৫০সি-র আওতায় করযোগ্য বলা যাবে না। ট্রাইবুনালের মতে, এই ক্ষতিপূরণ বিক্রয়মূল্যের অংশ নয় এবং এটি কোনো স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থ নয়।

Advertisements

রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ক্ষতিপূরণ মূলত বিল্ডারের পক্ষ থেকে ক্রেতাকে বিলম্বজনিত অসুবিধার জন্য প্রদত্ত “সুদস্বরূপ অর্থ”। তাই এটি “Income from Other Sources” বা “অন্যান্য উৎস থেকে আয়”-এর অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ব্যক্তির কর স্ল্যাব অনুযায়ী করযোগ্য হবে — মূলধন লাভ (Capital Gains) হিসেবে নয়।

   

বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া, বিক্রয়মূল্য ও ক্ষতিপূরণ আলাদা:
সুদিত কে. পারেখ অ্যান্ড কো. এলএলপি-র পার্টনার অনিতা বাসরুর এই রায়কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই রায়ে পরিষ্কারভাবে বোঝানো হয়েছে যে বিক্রয়মূল্য (sale consideration) এবং ক্ষতিপূরণ (compensation) দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্টের ধারা ৫০সি কেবল তখনই প্রযোজ্য, যখন কোনো সম্পত্তি হস্তান্তরের বিক্রয়মূল্য স্ট্যাম্প ডিউটি মূল্যের তুলনায় কম হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটটি জমির বিনিময়ে পাওয়া হয়েছিল, এবং অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ ছিল শুধুমাত্র বিলম্বজনিত অর্থপ্রদান — বিক্রয়মূল্য নয়। ফলে এই রায় বর্তমান সময়ে প্রকল্প বিলম্বে ভোগা ক্রেতাদের জন্য বড় স্বস্তির খবর।”

করদাতাদের জন্য স্বস্তির বার্তা:
বাসরুরের মতে, “প্রকল্পে বিলম্ব এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়তে থাকায় এই রায় বহু অমীমাংসিত কর-বিতর্ক মেটাতে সাহায্য করবে।”
এনপিভি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এলএলপি-র ডিরেক্ট ট্যাক্স পার্টনার সিএ অক্ষয় জৈনও একই মত প্রকাশ করে বলেন, “ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সময় কোনো স্থাবর সম্পত্তির হস্তান্তর ঘটে না, তাই একে মূলধন লাভ হিসেবে কর ধার্য করা যাবে না। এটি স্পষ্টভাবে ‘অন্যান্য উৎস থেকে আয়’-এর অন্তর্ভুক্ত।”

Advertisements

ডেভেলপমেন্ট রাইটস ও ধারা ৫০সি প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা:
জৈন আরও জানান, “ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্টের ধারা ৫০সি কেবল তখনই প্রযোজ্য হয়, যখন জমি বা ভবনের প্রকৃত হস্তান্তর ঘটে। কিন্তু ডেভেলপমেন্ট রাইটসের (উন্নয়ন অধিকার) বিলোপের ক্ষেত্রে কোনো সরাসরি হস্তান্তর হয় না, তাই ৫০সি ধারা এখানে প্রযোজ্য নয়।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন সুর্ণা চন্দ্রকান্ত ভোজানে বনাম আইটিও মামলার রায়, যেখানে মুম্বই আইটিএটি একই রকম ব্যাখ্যা প্রদান করেছিল।

এই রায় করদাতাদের জন্য এক বড় স্বস্তি এনেছে। বাড়ি বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরে বিলম্বের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিভ্রান্তি দূর হল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি রিয়েল এস্টেট খাতে কর-বিতর্কের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশক রায় হিসেবে কাজ করবে এবং ভবিষ্যতের বহু মামলায় এর প্রভাব দেখা যাবে।