সপ্তাহ পর সংসদে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট(Budget 2025)পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন । প্রতিবছর বাজেট পেশের পূর্বে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি বার বার উঠে আসে তা হলো বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য কী বিশেষ কোন ঘোষণা থাকবে?
এই মুহূর্তে দেশের মধ্যবিত্তদের মধ্যে বাজেট সম্পর্কিত নানা প্রত্যাশা জেগে উঠেছে। বিশেষত করছাড়, সঞ্চয় বৃদ্ধির সুযোগ এবং মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আসন্ন বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা এবং করছাড় ঘোষণা করা হতে পারে।
ইনফোমেরিকস রেটিংসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মনোরঞ্জন শর্মা বলেন, “নতুন কর ব্যবস্থায় ৩ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য কর কমানো হতে পারে। এছাড়াও, এই স্ল্যাবের জন্য ছাড়ের সীমা ৩ লাখ টাকার বেশি করা হতে পারে। মূল্যস্ফীতির উচ্চতা এবং ভোক্তা চাহিদা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে, ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয়ের মধ্যবিত্তদের জন্যও কিছু করছাড় দেওয়া হতে পারে।”
অন্যদিকে ট্যাক্স কনেক্ট অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পার্টনার বিবেক জালান প্রস্তাব দিয়েছেন পুরোনো কর ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে নতুন ব্যবস্থা আরও সহজতর করার জন্য। তিনি বলেছেন, “নতুন কর ব্যবস্থা সহজ হয়েছে এবং এর অধীনে ৭ লাখ টাকার পর্যন্ত আয়ের জন্য কোনও কর দিতে হয় না। তাই সরকারের উচিত পুরোনো ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করা এবং নতুন ব্যবস্থাকে একমাত্র ব্যবস্থা হিসেবে চালু করা।”
এছাড়া, শর্মা আরও উল্লেখ করেছেন যে “পেনশন সঞ্চয়ের জন্য নতুন বাজেটে কিছু বাড়তি সুবিধা দেওয়া হতে পারে। ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম এ বিনিয়োগের জন্য করমুক্ত সীমা বর্তমানে ৫০ হাজার টাকা।
আগামী বাজেটে এটি বাড়ানো হতে পারে এবং টাকা তোলার নিয়ম আরও নমনীয় করা হতে পারে। এতে করদাতারা তাদের পেনশন সঞ্চয় বাড়াতে আরও সক্ষম হবেন।”
মধ্যবিত্তের জন্য আরও কিছু সহায়ক ব্যবস্থা, যেমন গ্রামীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কিম এ বাড়তি বরাদ্দ, কৃষি আয় সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর জিএসটি হারের সমন্বয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, বলে শর্মা মন্তব্য করেছেন।
দেশের মধ্যবিত্ত সমাজ আশা করছে বাজেট ২০২৫-এ সঞ্চয় বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার জন্য নানা পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে। যা দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং চাকরির বাজারের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে, বাজেটে সঞ্চয় বৃদ্ধি এবং কর ছাড়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। যা মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং তাদের আর্থিক চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে।
মধ্যবিত্ত জনগণের জন্য সরকার যদি এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে এটি শুধু তাদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না, বরং দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে।