পাসপোর্টের জন্য জন্মসনদই যথেষ্ট প্রমাণ! জেনে নিন নতুন নিয়ম

ভারত সরকার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেছে। এখন থেকে, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর বা তার পর জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের জন্য পাসপোর্টের জন্মতারিখ (DoB)…

birth-certificate-sufficient-proof-for-passport-new-rule-details

ভারত সরকার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেছে। এখন থেকে, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর বা তার পর জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের জন্য পাসপোর্টের জন্মতারিখ (DoB) প্রমাণ হিসেবে শুধুমাত্র জন্মসনদই প্রযোজ্য হবে। এই নীতিগত পরিবর্তনটি ডকুমেন্টেশনকে মানানসই করতে এবং যাচাই প্রক্রিয়া সহজ করতে চালু করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে, বিদেশ মন্ত্রক (MEA) ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, নতুন পাসপোর্ট নিয়মগুলি সরকারী গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর কার্যকর হবে। এই পরিবর্তনটি পুরানো নিয়মের থেকে আলাদা, যেখানে জন্মতারিখ প্রমাণের জন্য একাধিক দলিলের প্রয়োজন ছিল। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের শুধুমাত্র জন্মসনদ প্রদানের মাধ্যমেই তাদের জন্মতারিখ প্রমাণ করতে হবে।

kolkata24x7-sports-News

   

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শুধুমাত্র সেই জন্মসনদগুলোকে পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ায় গ্রহণযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে, যা পৌরসভা, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন অফিস বা অন্য কোনো অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা দেওয়া হবে। এই নিয়ম কেবল ২০২৩ সালের ১ অক্টোবরের পর জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। তবে, যারা এই তারিখের আগে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য পুরনো নিয়মগুলি কার্যকর থাকবে, এবং সেই অনুযায়ী প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, স্কুল সার্টিফিকেট, অথবা সরকারি সেবা রেকর্ডের মতো অন্যান্য দলিলগুলো এখনও বৈধ থাকবে।

পাসপোর্টের শেষ পৃষ্ঠায় আবেদনকারীর বাসস্থানের ঠিকানা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার। এর পরিবর্তে, পাসপোর্টে একটি বারকোড থাকবে, যার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আবেদনকারীর ঠিকানা জানতে পারবেন। এছাড়া, পাসপোর্টের শেষ পৃষ্ঠায় আবেদনকারীর বাবা-মায়ের নামও থাকবে না, যা বিশেষভাবে বিচ্ছিন্ন বা বিচ্ছিন্ন পরিবারের জন্য একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে চালু করা হয়েছে।

পাসপোর্টের জন্য একটি নতুন রঙ কোডিং সিস্টেম চালু করেছে সরকার। পাসপোর্টের নতুন রঙ কোডিং সিস্টেম:

– সাদা পাসপোর্ট পাবেন সরকারী কর্মকর্তা।
– লাল পাসপোর্ট পাবেন জাতীয় প্রতিনিধিরা।
– নীল পাসপোর্ট সাধারণ নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য থাকবে।

পাসপোর্ট সেবা সিস্টেমের আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে ভারত সরকার। বর্তমানে ৪৪২টি পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (POPSK) রয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে ৬০০টি হয়ে যাবে। এই সম্প্রসারণের জন্য, বিদেশ মন্ত্রক এবং পোস্টাল বিভাগের মধ্যে একটি মেমোরেন্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (MoU) পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে পাসপোর্ট সেবা POPSK গুলির মাধ্যমে চালু থাকে।

পাসপোর্টের জন্য জন্মতারিখ প্রমাণ হিসেবে জন্মসনদকে অনুমোদিত করার আগে, অনেক গ্রামাঞ্চলের মানুষদের জন্য জন্মসনদ পাওয়া কঠিন ছিল। তবে, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন আইন (১৯৬৯) কার্যকর হওয়ার পর থেকে, সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবিলা করেছে এবং এখন থেকে জন্মসনদকে জন্মতারিখ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য ঘোষণা করেছে।

এই নতুন নিয়মগুলি পাসপোর্ট ইস্যু প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ, দ্রুত এবং সুরক্ষিত করবে। সরকারি কর্মকর্তারা আশা করছেন যে, এটি সনাক্তকরণের প্রক্রিয়া একীকৃত করবে এবং নিরাপত্তা বাড়াবে। যদিও প্রথমে কিছু লোকের জন্য নতুন নিয়মে পরিবর্তনটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি সেবা প্রক্রিয়া এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন নিয়মগুলির মাধ্যমে সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আরও আধুনিক এবং নিরাপদ হবে। এই পদক্ষেপগুলির ফলে পাসপোর্ট ইস্যু প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হবে এবং মানুষের জন্য অধিক সুবিধাজনক হবে।

ভারত সরকারের পাসপোর্ট নিয়মে এই পরিবর্তনগুলি দেশের নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি। এটি পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার দ্রুততা, সুরক্ষা এবং আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, এবং সবার জন্য একটি সহজ এবং একক নিয়ম তৈরি করবে।