কর্ণাটকে SBI ব্যাংক শাখায় দস্যুদের হামলা, কোটি টাকার সোনা-নগদ উধাও

কর্ণাটকের বিজাপুর জেলার চাডাচন শহরে মঙ্গলবার এক চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)-র একটি শাখায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের একটি দল প্রবেশ করে ব্যাংকের…

Bijapur bank robbery series

কর্ণাটকের বিজাপুর জেলার চাডাচন শহরে মঙ্গলবার এক চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)-র একটি শাখায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের একটি দল প্রবেশ করে ব্যাংকের ভল্ট থেকে প্রায় ৫০ কেজি সোনা ও প্রায় ৮ কোটি টাকার নগদ লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনায় গোটা অঞ্চলজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সামরিক পোশাকে ছদ্মবেশে প্রবেশ:

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাঁচজনেরও বেশি দুষ্কৃতী সামরিক পোশাক পরে ব্যাংকের শাখায় ঢোকে। তাদের মুখ ঢাকা ছিল যাতে কেউ চিনতে না পারে। হাতে দেশি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তারা হঠাৎ করেই শাখায় উপস্থিত গ্রাহক ও কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে।

   

ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারকে বন্দুকের মুখে বন্দি: Bijapur bank robbery series

দুষ্কৃতীরা ব্যাংকের ম্যানেজার এবং ক্যাশিয়ারসহ বেশ কয়েকজন কর্মীকে বন্দুকের মুখে বন্দি করে। তারপর তাদের বেঁধে ফেলে ভল্ট খুলতে বাধ্য করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, পুরো ঘটনাটি কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটে যায়। ব্যাংকের ভেতরে উপস্থিত গ্রাহকরাও ভয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়েন।

লুটের পর পালিয়ে যায় ডাকাত দল:

অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে লুটপাট সেরে দুষ্কৃতীরা অদৃশ্য হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই তারা পালিয়ে যায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লুট হওয়া টাকার ও সোনার সঠিক হিসাব অডিটের পরই নিশ্চিত হবে। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, প্রায় ৫০ কেজি সোনা ও ৮ কোটি টাকার নগদ লোপাট হয়েছে।

পূর্ব পরিকল্পনার ইঙ্গিত:

পুলিশের ধারণা, এই ডাকাতি বহুদিন ধরে পরিকল্পিত ছিল। দুষ্কৃতীদের দ্রুততা, সমন্বয় এবং ব্যাংকের কাজকর্ম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রমাণ করছে যে তারা আগে থেকেই কৌশল ঠিক করে রেখেছিল। গোটা জেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকায়ও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisements
পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি:

উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের জুন মাসে বিজাপুর শহরের কানাড়া ব্যাংকের একটি শাখায় একই ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেছিল। সেখান থেকে ৫৯ কেজি বন্ধক রাখা সোনা ও ৫ লক্ষ টাকার নগদ লুট হয়েছিল। সেই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার মধ্যে একজন ছিলেন প্রাক্তন ব্যাংক ম্যানেজার।

আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা:

ঘটনার পর থেকেই চাডাচন শহরে ভয় ও আতঙ্কের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকের কর্মী ও গ্রাহকেরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।

তদন্তে নেমেছে পুলিশ:

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুষ্কৃতীদের সন্ধানে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। জেলার সীমান্ত এলাকায় নাকা চেকিং চলছে। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর। আমরা বিশ্বাস করি দুষ্কৃতীরা দ্রুত আইনের আওতায় আসবে।”

শেষ কথা:

এই দুঃসাহসিক ব্যাংক ডাকাতি কর্ণাটক জুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একদিকে ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, অন্যদিকে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই চাঞ্চল্যকর মামলার নানা দিক অজানাই থেকে যাবে।