ভারতী এয়ারটেল নিশ্চিত করেছে যে, এটি টাটা গ্রুপের সাথে টাটা প্লে (পূর্বে টাটা স্কাই) এর ডিরেক্ট-টু-হোম (DTH) ব্যবসা এবং তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতী টেলিমিডিয়া লিমিটেড এর মধ্যে একটি সম্ভাব্য মার্জারের বিষয়ে আলোচনা করছে। বুধবার এক স্টক এক্সচেঞ্জ ফাইলিংয়ে এয়ারটেল জানিয়েছে, “এটি শুধুমাত্র একটি আলোচনা স্তরে রয়েছে,” এমন একটি রিপোর্ট প্রকাশের পর, যা টাটা প্লে এবং এয়ারটেল ডিজিটাল টিভির মধ্যে মার্জারের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে।
আর্থিক দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমস অনুসারে, এই মার্জারের মধ্যে একটি শেয়ার-স্প্যাপ চুক্তি থাকতে পারে, যেখানে এয়ারটেল মিশ্রিত কোম্পানির ৫০ শতাংশেরও বেশি শেয়ার অধিকারী হবে। এয়ারটেলের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এর মাধ্যমে কোম্পানি তার আয়ের উৎস বৈচিত্র্য করতে পারবে এবং নন-মোবাইল সেক্টরে আরও আয় তৈরি করতে সক্ষম হবে। এই মার্জারটি এয়ারটেলকে টাটা প্লে এর ২০ মিলিয়ন গৃহস্থালী ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছানোর সুযোগও প্রদান করবে, যা কোম্পানিকে ব্রডব্যান্ড, টেলিকম এবং DTH পরিষেবাগুলি একত্রিত করে একটি একক সাবস্ক্রিপশন অফার তৈরি করার সুবিধা দেবে।
এই মার্জারটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি হবে DTH সেক্টরে দ্বিতীয় বড় মের্জার, এর আগে ২০১৬ সালে ভিডিওকন D2H এবং ডিশ টিভি এর মধ্যে মার্জারটি হয়েছিল। নতুন মের্জড কোম্পানির নেতৃত্ব দেবে এয়ারটেলের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এবং টাটা গ্রুপ চুক্তির আওতায় দুটি বোর্ড সিট রাখবে। এটির মোট মূল্যায়ন ৭,০০০ কোটি টাকা হতে পারে, এবং ডিজনি তাদের শেয়ারগুলি মিশ্রিত কোম্পানিতে রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টাটা স্কাই ২০০৪ সালে টাটা সন্স এবং রুপার্ট মুরডকের ২১শ শতাব্দীর ফক্স এর যৌথ উদ্যোগ হিসেবে শুরু হয়েছিল। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে, ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ২১শ শতাব্দীর ফক্সের শেয়ার অধিকার অর্জন করে এবং ২০২২ সালে টাটা স্কাই নামটি পরিবর্তন করে টাটা প্লে হিসেবে নতুন ব্র্যান্ড নাম ধারণ করে।
একদিকে, পে-টিভি বাজারের প্রবণতা ধীরে ধীরে অবনতির দিকে যাচ্ছে। কিছু বছর আগেও ১২০ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার ছিল, যা বর্তমানে কমে ৮৪ মিলিয়ন গৃহস্থালি পর্যায়ে নেমে এসেছে। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে DTH ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ৭০ মিলিয়ন থেকে ৬০ মিলিয়ন এ নেমে এসেছে। এটি গ্রাহকদের পছন্দের পরিবর্তন এবং প্রথাগত পে-টিভি পরিষেবার সংকুচিত বাজারের ইঙ্গিত দেয়।
এয়ারটেল এবং টাটা গ্রুপের সম্ভাব্য এই মার্জারটি DTH এবং টেলিকম খাতে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। এই পদক্ষেপটি গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী এবং সহজ পরিষেবা প্রদান করতে সাহায্য করবে, বিশেষ করে যারা একাধিক পরিষেবা (ব্রডব্যান্ড, টেলিকম, DTH) একত্রিত করতে চান। পাশাপাশি, মিশ্রিত কোম্পানি ব্যবসায়িক ক্ষেত্র যেমন টেলিকম, ডিটিএইচ এবং ব্রডব্যান্ড সেক্টরে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে।
এই সম্ভাব্য মার্জারটি DTH সেক্টরে বড় পরিবর্তন আনতে পারে এবং এয়ারটেল এবং টাটা গ্রুপের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে। তবে, এটি এখনও একটি আলোচনা স্তরে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হবে।