আসছে নভেম্বর থেকেই পাল্টে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, লকার ও সেফ কাস্টডিতে রাখা সম্পদের মনোনয়ন নিয়ম। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে Banking Laws (Amendment) Act, 2025-এর মনোনয়ন সংক্রান্ত মূল বিধানগুলি।
এই সংশোধনের ফলে গ্রাহকরা এখন তাঁদের জমা টাকা, সেফ কাস্টডি বা লকারের সম্পদের জন্য আরও স্পষ্ট, নমনীয় ও স্বচ্ছভাবে মনোনয়ন নির্ধারণ করতে পারবেন।
অর্থ মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আইন অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার বিভিন্ন ধারাকে বিভিন্ন তারিখে কার্যকর করার ক্ষমতা রাখে। সেই অনুযায়ী, এই আইনের ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ধারা কার্যকর হবে ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে।
নতুন মনোনয়ন বিধির মূল দিকগুলি
- গ্রাহক সর্বাধিক চারজন পর্যন্ত মনোনীত করতে পারবেন, একসঙ্গে (simultaneous) বা পর্যায়ক্রমে (successive) — নিজের পছন্দ অনুযায়ী।
- ডিপোজিট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে, প্রত্যেক মনোনীত ব্যক্তির জন্য নির্দিষ্ট অংশ বা শতাংশ উল্লেখ করা যাবে, যার মোট যোগফল হবে ১০০ শতাংশ— ফলে দাবি নিষ্পত্তি হবে আরও স্বচ্ছ ও ন্যায্যভাবে।
- সেফ কাস্টডি ও সেফটি লকারের ক্ষেত্রে, কেবল পর্যায়ক্রমিক মনোনয়নই কার্যকর হবে— অর্থাৎ প্রথম মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যুর পরই পরবর্তী মনোনয়িত ব্যক্তি কার্যকর হবেন।
এই নতুন পদ্ধতিতে দাবি নিষ্পত্তি আরও দ্রুত, সহজ ও গ্রাহকবান্ধব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একরূপ নিয়মে সব ব্যাঙ্ক Bank Nomination Rules Change
এই ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে কেন্দ্র শিগগিরই প্রকাশ করবে Banking Companies (Nomination) Rules, 2025। এতে মনোনয়ন করা, বাতিল করা কিংবা একাধিক মনোনয়ন নির্দিষ্ট করার বিস্তারিত প্রক্রিয়া ও ফর্মের নমুনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যাতে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কে এই বিধান একরূপভাবে কার্যকর হয়।
ব্যাঙ্কিং সংস্কারের পথে আরও এক ধাপ
২০২৫ সালের Banking Laws (Amendment) Act–এর মাধ্যমে মোট ১৯টি সংশোধনী আনা হয়েছে, যা প্রযোজ্য হবে পাঁচটি প্রধান আইনে—
- ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৩৪
- ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৯
- ভারতের স্টেট ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৫৫
- ব্যাঙ্কিং কোম্পানি (অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর) আইন, ১৯৭০ ও ১৯৮০
এই আইন ব্যাঙ্কিং খাতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা জোরদার করবে, RBI-র কাছে রিপোর্টিং পদ্ধতি একরূপ করবে, আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা আরও শক্তিশালী করবে এবং সরকারি ব্যাঙ্কগুলির অডিট ব্যবস্থাকে আধুনিক করবে। পাশাপাশি গ্রাহক পরিষেবা ও মনোনয়ন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য করাই এই আইনের অন্যতম লক্ষ্য।
