ভারতে ই-স্কুটারের বাজারে প্রবেশে প্রস্তুত Yamaha, ২০২৬-এ আনছে দুটি মডেল

Yamaha Aerox Electric revealed

ইয়ামাহা মোটর ইন্ডিয়া তাদের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বোম্বেতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে উন্মোচন করল দুটি নতুন ইলেকট্রিক স্কুটার — Yamaha Aerox EYamaha EC-06। এর মাধ্যমে জাপানি দুই চাকার ব্র্যান্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল যে, তারা ভারতের দ্রুত বাড়তে থাকা ইলেকট্রিক টু-হুইলার মার্কেটে প্রবেশ করতে চলেছে। সংস্থা জানিয়েছে, এই দুটি ইলেকট্রিক স্কুটার ২০২৬ সালের শেষের দিকে ভারতে লঞ্চ করা হবে। ইয়ামাহার এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মোট ১০টি নতুন মডেল আনার কথা রয়েছে, যার মধ্যে ৮টি আইসিই (ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিন) মডেল বাজারে আগে লঞ্চ হবে এবং ইলেকট্রিক মডেল দুটি পরে।

Advertisements

ভারতের ‘বিকশিত ভারত’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি এই ইলেকট্রিক স্কুটারগুলি সম্পর্কে ইয়ামাহা জানিয়েছে, Aerox E এবং EC-06 এর মধ্যে Aerox E হবে সম্পূর্ণ ভারতকেন্দ্রিক একটি ইলেকট্রিক স্কুটার, যার দাম ঘোষণা করা হবে ২০২৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে। সংস্থা আরও জানায় যে, তারা ইলেকট্রিক যানবাহন আনার আগে দেশে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও শুরু করবে।

   

Yamaha Aerox E: পারফরম্যান্স ও টেকনোলজির মেলবন্ধন

Aerox E ডিজাইন করা হয়েছে এক পারফরম্যান্স-কেন্দ্রিক ইলেকট্রিক ম্যাক্সি-স্কুটার হিসেবে, যা দেবে ঝটপট টর্ক ও মসৃণ অ্যাক্সেলরেশন। এটি তৈরি হয়েছে প্রচলিত Aerox 155 স্কুটারের ভিত্তিতে, তবে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক পাওয়ারট্রেন সহ। এতে রয়েছে ১.৫ কিলোওয়াট-আওয়ারের দুটি ডিট্যাচেবল ব্যাটারি, অর্থাৎ মোট ৩ কিলোওয়াট-আওয়ার ইউজেবল ব্যাটারি ক্যাপাসিটি। এগুলি চালায় একটি ৯.৪ কিলোওয়াট মোটর, যা দেয় সর্বোচ্চ ৪৮ নিউটন মিটার টর্ক এবং একবার চার্জে প্রায় ১০৬ কিলোমিটার রেঞ্জ।

ডিজাইন ও ফিচারের দিক থেকেও Aerox E বেশ আধুনিক। এতে রয়েছে ৫ ইঞ্চির ফুল-কালার TFT ড্যাশ, যেখানে Bluetooth কানেক্টিভিটি, টার্ন-বাই-টার্ন ন্যাভিগেশন ও মিডিয়া কন্ট্রোল সুবিধা পাওয়া যাবে। রাইডাররা এখানে তিনটি রাইডিং মোড (ইকো, স্ট্যান্ডার্ড ও পাওয়ার) বেছে নিতে পারবেন, যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে Boost ফাংশন — দ্রুত ওভারটেকের সময় অতিরিক্ত শক্তি দেয়ার জন্য। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এতে সিঙ্গেল-চ্যানেল ABS ও ট্র্যাকশন কন্ট্রোল রয়েছে।

Yamaha EC-06: ভবিষ্যতের ডিজাইন ও দীর্ঘ রেঞ্জের প্রতিশ্রুতি

অন্যদিকে, Yamaha EC-06 ডিজাইনের দিক থেকে অনেক বেশি ভবিষ্যতধর্মী ও স্টাইলিশ। এটি উচ্চ কেন্দ্রীয় ভারসাম্যের ডিজাইন নিয়ে এসেছে, যা রাইডারকে দেয় আরামদায়ক ও সহজ নিয়ন্ত্রণ। তরুণ রাইডারদের কথা মাথায় রেখে এই স্কুটারে দেওয়া হয়েছে স্ট্যাকড LED হেডল্যাম্প, তীক্ষ্ণ রেখার ক্লিন বডিপ্যানেল ও আধুনিক লুক।

Advertisements

EC-06-এ ব্যবহৃত হয়েছে ৪ কিলোওয়াট ব্যাটারি প্যাক এবং একটি ৪.৫ কিলোওয়াট মোটর, যা সর্বোচ্চ ৬.৭ কিলোওয়াট পাওয়ার দেয়। এই স্কুটারটির রেঞ্জ প্রায় ১৬০ কিলোমিটার (IDC-claimed) এবং সর্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ঘরের সাধারণ প্লাগেই এটি চার্জ করা যায়, এবং সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা।

ফিচারের মধ্যে রয়েছে একটি LCD কনসোল, যাতে বিল্ট-ইন SIM টেলিমেটিক ইউনিট রয়েছে। এর মাধ্যমে রাইডাররা রিয়েল-টাইম স্মার্টফোন কানেক্টিভিটি ও ডেটা অ্যাক্সেস পাবেন। Aerox E-এর মতো এখানেও রয়েছে তিনটি রাইডিং মোড ও রিভার্স মোড।

প্রসঙ্গত, Aerox E ও EC-06 Yamaha-র ইলেকট্রিক ভবিষ্যতের প্রথম পদক্ষেপ। ভারতের ইলেকট্রিক স্কুটার মার্কেটে প্রতিযোগিতা যেমন বাড়ছে, তেমনই ইয়ামাহার এই দুই মডেল সেই দৌড়ে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।