ভারতের বৈদ্যুতিক টু-হুইলার বাজারে গত কয়েক বছরে বাজাজ অটো-র উত্থান চোখে পড়ার মতো। Chetak ৩৫ সিরিজ ও ৩০ সিরিজ-এর মাধ্যমে কোম্পানি ইতিমধ্যেই এই সেগমেন্টে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। আর এবার বাজাজ তাদের জনপ্রিয় স্কুটার Chetak-এর একেবারে নতুন প্রজন্মের (Next-Gen) মডেল নিয়ে আসছে। সম্প্রতি সেই Next-Gen Bajaj Chetak-এর প্রথম স্পাই শট ফাঁস হয়েছে, যা মোটরবাইক প্রেমীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও বাজাজ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চের তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালেই এই বৈদ্যুতিক স্কুটার রাস্তায় দেখা যাবে।
Next-Gen Bajaj Chetak: নতুন নকশা
স্পাই শট অনুযায়ী, এই নতুন প্রজন্মের চেতক স্কুটারে ডিজাইনে তেমন বড় পরিবর্তন না দেখা গেলেও কিছু সূক্ষ্ম কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আপডেট নজরে এসেছে। সামগ্রিক সিলুয়েট আগের মতোই রাখা হয়েছে, যাতে চেতকের ঐতিহ্য বজায় থাকে। তবে রিয়ার LED টেললাইট এখন পুরোপুরি নতুন ডিজাইনে এসেছে—একটি একক ইউনিটে ব্রেক লাইট ও টার্ন ইন্ডিকেটর মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। নম্বর প্লেট হোল্ডার-এর অবস্থান কিছুটা বদলানো হয়েছে এবং এবার রিয়ার টায়ার হাগার যুক্ত করা হয়েছে। চার্জিং পোর্ট আগের জায়গায় না থেকে হয়তো ফ্রন্ট অ্যাপ্রন-এর অংশে সরানো হয়েছে, যা বর্তমানে ক্যামোফ্লেজের আড়ালে লুকিয়ে আছে।
ফ্রন্ট ডিজাইনে LED হেডলাইট ও DRL একই ধরনের থাকলেও এবার চেতক লোগো-এর জায়গায় এসেছে “Chetak” লেখা লেটারিং। টার্ন ইন্ডিকেটর গুলোকে অ্যাপ্রন থেকে সরিয়ে হ্যান্ডেলবার এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। সিট আরও সমতল এবং প্রশস্ত হয়েছে, যাতে যাত্রীরা আরামদায়ক রাইড উপভোগ করতে পারেন। রিয়ার গ্র্যাব রেল আগের মডেল থেকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
অটোমোটিভ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্পাইড স্কুটারটি সম্ভবত Next-Gen Chetak ৩৫০২ বা ৩০০২ মডেলের মিড-লেভেল ভ্যারিয়েন্ট। কারণ এতে সামনে ডিস্ক ব্রেক থাকলেও কিছু প্রিমিয়াম ফিচার অনুপস্থিত। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো—এতে ব্যবহৃত হয়েছে হাব মোটর, যা বর্তমানে কোনো চেতক মডেলে দেখা যায় না। এছাড়াও, এখানে কীলেস গো সিস্টেম নেই, এবং TFT স্ক্রিন-এর বদলে একটি নতুন আকারের LCD ক্লাস্টার দেখা গেছে। সুইচগিয়ার সম্পূর্ণ নতুন এবং ফ্যান্সি ORVM স্টক অনুপস্থিত। আগের মডেলে থাকা সিঙ্গেল-সাইডেড সাসপেনশন এবার টুইন টেলিস্কোপিক ফর্ক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শক্তিশালী ব্যাটারি ও উন্নত পারফরম্যান্স
নতুন প্রজন্মের চেতকে থাকতে পারে ৩ kWh বা ৩.৫ kWh ব্যাটারি প্যাক, যা একবার চার্জে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে সক্ষম হবে। বাজাজের লক্ষ্য, মূল নকশার ঐতিহ্য বজায় রেখে আধুনিক প্রযুক্তি ও পারফরম্যান্স যোগ করা, যাতে এই স্কুটারটি পুরনো গ্রাহক এবং নতুন প্রজন্ম—দু’য়ের কাছেই আকর্ষণীয় হয়। প্রসঙ্গত, Next-Gen Bajaj Chetak হতে চলেছে ক্লাসিক ডিজাইন ও আধুনিক টেকনোলজির এক অসাধারণ সংমিশ্রণ। এখন শুধু অপেক্ষা—কবে এই নতুন প্রজন্মের বৈদ্যুতিক স্কুটারটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে ভারতের বাজারে।