মারুতির এই জনপ্রিয় গাড়ি লঞ্চ হল ভিনদেশে, দেশীয় ভার্সনের থেকে কতটা আলাদা?

ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সেডান Maruti Suzuki Dzire এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অফিসিয়ালি লঞ্চ হয়েছে। এর আগে গাড়িটি ফিলিপিন্সে লঞ্চ করা হয়েছিল, আর এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় পা…

Maruti Suzuki Dzire launched in South Africa

ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সেডান Maruti Suzuki Dzire এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অফিসিয়ালি লঞ্চ হয়েছে। এর আগে গাড়িটি ফিলিপিন্সে লঞ্চ করা হয়েছিল, আর এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রাখল এই সাশ্রয়ী পারিবারিক সেডান। যদিও ডিজায়ার দক্ষিণ আফ্রিকায় একই প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে যেটি ভারতে ব্যবহৃত হয়, তবে কিছু দিক থেকে দু’টি মডেলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। চলুন সেগুলি দেখে নেওয়া যাক।

Maruti Suzuki Dzire-এর ডিজাইনে সামান্য পরিবর্তন

বাহ্যিক ডিজাইন প্রায় একই থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার ডিজায়ার মডেলটি কিছু ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে মিনিমালিস্ট অ্যাপ্রোচ নিয়েছে। ভারতীয় মডেলে থাকা এলইডি হেডল্যাম্প-এর পরিবর্তে সেখানে রয়েছে প্রজেক্টর হ্যালোজেন ইউনিট। ১৫-ইঞ্চি অ্যালয় হুইল একই থাকলেও, সেগুলি ব্ল্যাক ফিনিশ-এ এসেছে, যা সাধারণত ভারতীয় মডেলে বেশি প্রিমিয়াম লুকে পাওয়া যায়। এলইডি ডিআরএল এবং ফগ ল্যাম্প অনুপস্থিত হওয়ায় গাড়ির সামগ্রিক উপস্থিতিতে কিছুটা কম প্রিমিয়াম ফিল আসে। অভ্যন্তরীণভাবে, কেবিন ডিজাইন প্রায় একই থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মডেলটিতে ড্যাশবোর্ডে সিলভার ট্রিম এর অনুপস্থিতি একটি সাধারণ, কার্যকরী অনুভূতি দেয়।

   

KTM-কে বাঁচাতে মাঠে নামল Bajaj, 5,431 কোটির দেনা স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিল

ভারতীয় ডিজায়ার (Maruti Suzuki Dzire) এখন সানরুফ, ওয়্যারলেস চার্জিং, ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরা-র মতো একাধিক প্রিমিয়াম ফিচার নিয়ে আসছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মডেলটি এই সব বিলাসিতা বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় দিকেই মনোযোগ দিয়েছে। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে ৭-ইঞ্চির ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম, যা ভারতে সাধারণত নিম্নতর ভ্যারিয়েন্টে দেখা যায়। পুশ-বাটন স্টার্ট, লেদার-র‌্যাপড স্টিয়ারিং এবং কানেক্টেড কার টেকনোলজি নেই। তবে মূল বৈশিষ্ট্যগুলি বজায় রাখা হয়েছে—যেমন ক্রুজ কন্ট্রোল, অটো ক্লাইমেট কন্ট্রোল, রিয়ার এসি ভেন্ট, এবং মাল্টি ইনফো ডিসপ্লে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, দু’টি মডেলেই ৬টি এয়ারব্যাগ, ESC, রিয়ার পার্কিং সেন্সর, এবং ISOFIX মাউন্ট স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে দেওয়া হয়েছে, যা নিরাপত্তায় বড় পদক্ষেপ।

ইঞ্জিন ও গিয়ারবক্সে পার্থক্য

দক্ষিণ আফ্রিকার ডিজায়ারে ব্যবহৃত হয়েছে ভারতের মতোই ১.২-লিটার, ৩-সিলিন্ডার পেট্রোল ইঞ্জিন, যা ৮২ PS পাওয়ার এবং ১১২ Nm টর্ক প্রদান করে। তবে ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে রয়েছে বড় পার্থক্য। যেখানে ভারতে ম্যানুয়াল এবং AMT (Auto Gear Shift) বিকল্প রয়েছে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকায় CVT (Continuously Variable Transmission) ব্যবহার করা হয়েছে, যা আরও স্মুথ এবং শহুরে ট্রাফিকে চালাতে সুবিধাজনক। ভারতের CNG ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বাজারে আনা হয়নি।

Advertisements

দক্ষিণ আফ্রিকার ডিজায়ারের দাম শুরু হয়েছে আর২২৪,৯০০ থেকে আর২৬৬,৯০০, যা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১০.৬৬ লক্ষ থেকে ১২.৬৫ লক্ষ টাকা। তুলনায়, ভারতে এই গাড়িটির দাম ৬.৮৪ লক্ষ থেকে ১০.১৯ লক্ষের মধ্যে। মূলত আমদানি শুল্ক, কারেন্সি কনভার্সন, এবং CVT গিয়ারবক্স-এর মতো অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্যের জন্যই এই দামের ব্যবধান। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকায় ডিজায়ারকে একটি মিড-রেঞ্জ সেডান হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যেখানে ভারতে এটি এন্ট্রি-লেভেল সেডান হিসেবে পরিচিত।

সদ্য লঞ্চ হওয়া দুর্ধর্ষ ক্রুজার বাইক নিয়ে বড় ঘোষণা করল হোন্ডা, দেখে নিন

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকায় মারুতি সুজুকি ডিজায়ারের (Maruti Suzuki Dzire) প্রবেশ সংস্থার আন্তর্জাতিক বাজারে বিস্তারের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদিও কিছু ফিচার কমিয়ে সাশ্রয়ী করার চেষ্টা করা হয়েছে, তবুও এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি বজায় রাখা হয়েছে, এবং CVT ট্রান্সমিশন গাড়িটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বাজারে ডিজায়ার কতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে।