দুই চাকার গাড়ির দুনিয়ায় বড় খবর এনেছে Hero MotoCorp। জনপ্রিয় অ্যাডভেঞ্চার বাইক Hero Xpulse 210 এখন আগের চেয়ে অনেকটাই সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি ৩৫০ সিসির নিচের মোটরসাইকেলের ওপর GST হ্রাস করার ফলে বাইকটির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে অ্যাডভেঞ্চার সেগমেন্টের ক্রেতাদের জন্য এটি এখন আরও আকর্ষণীয় অপশন হয়ে উঠেছে।
Hero Xpulse 210-এর দাম কমেছে প্রায় ১৪,০০০
হিরো এক্সপাল্স ২১০ বাজারে দুটি ভ্যারিয়েন্টে উপলব্ধ — বেস ও টপ ভ্যারিয়েন্ট। আগের দাম ছিল যথাক্রমে ১.৭৬ লক্ষ ও ১.৮৬ লক্ষ টাকা। নতুন GST হ্রাসের পর বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম নেমে এসেছে ১.৬২ লক্ষ টাকা, আর টপ ভ্যারিয়েন্টের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১.৭১ লক্ষ টাকা (এক্স-শোরুম)। অর্থাৎ ক্রেতারা এখন আগের তুলনায় প্রায় ১৪,০০০ টাকা পর্যন্ত কম খরচে এই বাইকটি কিনতে পারবেন।
হিরো এক্সপাল্স ২১০ তার আগের মডেল Xpulse 200-এর তুলনায় প্রায় সবদিক থেকেই উন্নত। এতে রয়েছে আরও শক্তিশালী ইঞ্জিন, আধুনিক ডিজাইন এবং উন্নত রাইডিং ডায়নামিক্স। বাইকের ইঞ্জিন পারফরম্যান্স এখন অনেক বেশি টর্কি ও পাঞ্চি, যা অ্যাডভেঞ্চার ও হাইওয়ে রাইড – উভয়ের জন্যই আদর্শ।
ইঞ্জিন ও পারফরম্যান্স
এই বাইকে ব্যবহৃত হয়েছে Karizma XMR থেকে নেওয়া ২১০ সিসি লিকুইড-কুল্ড DOHC ইঞ্জিন। এটি সর্বোচ্চ ২৪.২ বিএইচপি শক্তি ৯,২৫০ আরপিএম-এ এবং ২০.৭ এনএম টর্ক ৭,২৫০ আরপিএম-এ উৎপন্ন করে। ইঞ্জিনটির সঙ্গে রয়েছে ৬-স্পিড গিয়ারবক্স, যা হাইওয়েতে আরবান রাইডের সময় মসৃণ গিয়ার শিফটিং নিশ্চিত করে। এর ফলে রাইডাররা দীর্ঘ যাত্রায় আরও ভালো পারফরম্যান্স ও আরাম পাবেন।
চ্যাসিস ও সাসপেনশন সেটআপ
এক্সপাল্স ২১০-এর ফ্রেম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে স্টিল সেমি-ডাবল ক্র্যাডল ফ্রেম, যা বাইকটির স্থিতিশীলতা বাড়ায়। সাসপেনশনের দায়িত্বে রয়েছে টেলিস্কোপিক ফ্রন্ট ফর্কস এবং লিংকড মনোশক রিয়ার সাসপেনশন। এই সেটআপের ফলে রুক্ষ পথেও বাইকটি অত্যন্ত স্থিরভাবে চলতে পারে। বাইকটির কার্ব ওয়েট ১৬৮ কেজি, যা নিয়ন্ত্রণে সহজ এবং ব্যালেন্সড রাইডিংয়ের জন্য উপযুক্ত।
এক্সপাল্স ২১০-এ সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই ডিস্ক ব্রেক দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তিনটি ABS মোড — রোড, অফ-রোড ও র্যালি। এই ফিচারগুলি রাইডারদের বিভিন্ন রাইডিং কন্ডিশনে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ দেয়। অফ-রোডিং প্রেমীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপযোগী।
বাইকটিতে ১৩ লিটার ক্ষমতার ফুয়েল ট্যাঙ্ক রয়েছে, যা দীর্ঘ দূরত্বের রাইডে ঘন ঘন রিফুয়েলিংয়ের প্রয়োজন কমিয়ে দেয়। এর ডিজাইন রাগড হলেও আধুনিক, যা Xpulse সিরিজের স্বাক্ষর বহন করে। Xpulse 210-এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে Kawasaki KLX 230, যার দামও সাম্প্রতিক সময়ে কমেছে। তবে প্রযুক্তিগত দিক থেকে Xpulse 210 অনেক বেশি আধুনিক এবং ফিচার-সমৃদ্ধ।
নতুন GST হ্রাসের ফলে Hero Xpulse 210 এখন শুধু আরও সাশ্রয়ী নয়, বরং এর উন্নত পারফরম্যান্স ও আধুনিক ফিচারের কারণে অ্যাডভেঞ্চার সেগমেন্টে একটি দুর্দান্ত বিকল্প হয়ে উঠেছে। যারা দারুণ পারফরম্যান্স, শক্তিশালী বিল্ড ও প্রিমিয়াম রাইডিং অভিজ্ঞতা চান, তাদের জন্য এই বাইকটি নিঃসন্দেহে একটি ‘ভ্যালু ফর মানি’ প্যাকেজ।