দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে পিএলআই ও করছাড়ের আহ্বান জানাল ACFI

Agrochemical Production in India ভারতের কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে কৃষি-রসায়ন শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ খাত এখনও বিপুল পরিমাণে আমদানিনির্ভর, বিশেষত চীনের…

Agrochemical Production in India

Agrochemical Production in India

ভারতের কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে কৃষি-রসায়ন শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ খাত এখনও বিপুল পরিমাণে আমদানিনির্ভর, বিশেষত চীনের উপর। এই প্রেক্ষাপটে Agro Chem Federation of India (ACFI) সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে একটি বিশেষ Production Linked Incentive (PLI) স্কিম চালু করার জন্য এবং করছাড় (Tax Holiday) দেওয়ার জন্য, যাতে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ও আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পায়।

সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত অষ্টম বার্ষিক সাধারণ সভায় (AGM) ACFI এবং বৈশ্বিক পরামর্শদাতা সংস্থা Deloitte যৌথভাবে একটি জ্ঞানপত্র প্রকাশ করেছে— “Ensuring the availability of quality agrochemical products to farmers in India and globally”। এতে শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি, নীতি কাঠামো এবং ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।

   

রপ্তানিতে সাফল্য, কিন্তু আমদানিতে নির্ভরতা:

জ্ঞানপত্র অনুযায়ী, ভারত বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কৃষি-রসায়ন রপ্তানিকারক দেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের কৃষি-রসায়ন রপ্তানি মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এক দশক আগে মাত্র ১.৩ বিলিয়ন ছিল। তবে এখনও বহু গুরুত্বপূর্ণ Technical Ingredients এবং Key Intermediates চীন থেকে আমদানি করতে হয়।

Willowood-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারিক্ষিত মুন্ধ্রা মন্তব্য করেন, “চীনের উপর এই নির্ভরতা ভারতের জন্য কৌশলগত ঝুঁকি তৈরি করছে। ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা বা কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে ভারতের বাজারে ঘাটতি ও দামের অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।”

দেশীয় উৎপাদনে প্রযুক্তি ও পরিবেশগত সীমাবদ্ধতা: Agrochemical Production in India

জ্ঞানপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু উচ্চমূল্যের কাঁচামাল ও প্রযুক্তি এখনও দেশে যথেষ্ট পরিমাণে উৎপাদন হয় না। এর পেছনে রয়েছে প্রযুক্তির ঘাটতি, ব্যয়বহুল উৎপাদন খরচ এবং পরিবেশগত বাধা।

সরকারি ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা:

কৃষি কমিশনার ও রেজিস্ট্রেশন কমিটির চেয়ারম্যান প্রবীণ কুমার সিংহ বলেন, “শুধু ফসলের স্বাস্থ্য নয়, কৃষক সমাজের স্বাস্থ্যও সমানভাবে রক্ষা করতে হবে। কৃষি খাত সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

Advertisements

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার রাজীব রঞ্জন সুপারিশ করেন, সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে কৃষি-রসায়ন খাতে একটি বিশেষ PLI স্কিম চালু করতে হবে। বিশেষত যেসব কাঁচামাল ও সক্রিয় উপাদান চীন থেকে বড় আকারে আমদানি হয়, সেগুলি দেশে উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা দেওয়া উচিত। এর ফলে দেশীয় শিল্প শক্তিশালী হবে, আত্মনির্ভরতা বাড়বে এবং বিশ্ব সরবরাহ চেইনে ভারতের অবস্থান আরও মজবুত হবে।

ACFI-র নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাহুল ধানুকা বলেন, “Ease of Doing Business নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে শুধু কৃষি উৎপাদন বাড়বে না, আমাদের দ্বিগুণ কৃষক আয়ের লক্ষ্যও পূরণ করা সম্ভব হবে।” তিনি আরও জোর দেন, পাবলিক-প্রাইভেট R&D সহযোগিতা ও MSME শক্তিশালীকরণ কৃষি-রসায়ন খাতকে দীর্ঘমেয়াদে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।

শেষ কথা:

ভারতের কৃষি-রসায়ন শিল্প ইতিমধ্যেই রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু চীনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বড় ঝুঁকি বহন করছে। তাই সরকার যদি দ্রুত PLI স্কিম, করছাড় ও গবেষণা বিনিয়োগে প্রণোদনা ঘোষণা করে, তবে শুধু দেশীয় শিল্পই নয়, কৃষকরাও উপকৃত হবেন। একই সঙ্গে বিশ্ব খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলেও ভারতের অবদান আরও বাড়বে।

Business: The Agro Chem Federation of India (ACFI) urges the government to introduce a PLI scheme and tax holidays to boost domestic agrochemical production. A joint report with Deloitte highlights the strategic risk of India’s heavy import reliance on China despite being a major global exporter.