পানচাষে বিপর্যয়! টানা বৃষ্টিতে দাগ পড়ছে পাতায়, মাথায় হাত চাষিদের

purba-medinipur-betel-leaf-farmers-worried-as-unseasonal-showers-hit-crops

পূর্ব মেদিনীপুর, ৩০ অক্টোবরঃ অক্টোবরের শেষের দিকে থেকেই হঠাৎ অবিরাম বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পান চাষের (Betel Leaf)  মাঠ। জেলার একাধিক ব্লকের হাজার হাজার চাষি এই অকাল বর্ষণে চিন্তায় পড়েছেন। বিশেষ করে রামনগর, ময়না, নন্দকুমার, নন্দীগ্রাম–১, মহিষাদলসহ অন্যান্য অঞ্চলে পান চাষ বেশি। এই এলাকা থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিদেশে বিপুল পরিমাণ পানের রপ্তানি হয়।

Advertisements

চাষিরা জানিয়েছেন, “এমনিতেই পান চাষে নানা ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। পানা ফলাতে অনেক সময় ও শ্রম লাগে। খরচও গত কয়েক বছরে অনেক বেড়েছে। কিন্তু বাজারে দাম তেমন বাড়েনি। তার উপর এই অকাল বর্ষণ আমাদের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।” চাষিরা বলছেন, অক্টোবরের শেষের এই হঠাৎ বৃষ্টি এবং ঘূর্ণিঝড় মান্থারের আঘাত মূলত পানের পাতায় দাগ এবং শিকড়ে জল জমার কারণে ফসলের ক্ষতি করেছে। বিশেষ করে কিছু ক্ষেত্রের পাতা এখন পচনের দিকে যাচ্ছে। অনেক চাষি জানিয়েছেন, “পাতা নষ্ট হয়ে গেলে বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই আমাদের সারাবছরের পরিশ্রম ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

   

স্থানীয় কৃষি অফিসের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এমন অকাল বর্ষণ এবং অতিবৃষ্টির কারণে পানের রোগব্যাধি ছড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর ফলে পাতায় ছত্রাকের আক্রমণ এবং পচন বৃদ্ধি পেতে পারে। চাষিরা বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত আতঙ্কিত। গত কয়েক বছরে সার, জৈব সার, কৃষি উপকরণ ও শ্রমের খরচ বেড়েছে। তবু পানের দাম স্থিতিশীল না হওয়ায় চাষিদের লাভের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। অনেক চাষি ইতিমধ্যেই পান চাষ ছেড়ে বিকল্প রোজগারে মন দিয়েছেন। তবে যাঁরা এখনও এই চাষে টিকে রয়েছেন, তাঁদের জন্য অকাল বর্ষণ বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে।

Advertisements

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এখনও দেশের মধ্যে অন্যতম পানের উৎপাদন কেন্দ্র। জেলার চাষিরা দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং বিদেশে পানা রপ্তানি করেন। কিন্তু এই ধরনের প্রাকৃতিক ঝুঁকি ক্রমেই চাষিদের আতঙ্কিত করছে। ক্ষতি হলে শুধু চাষিরা নয়, বরং পুরো রপ্তানিমুখী বাজারেও প্রভাব পড়তে পারে।