সরকারের নতুন সার ভর্তুকি প্রকল্প ২০২৫: কৃষকদের জন্য কী রয়েছে?

Government Revises Urea Subsidy for 2025-26: Impact on Fertilizer Prices and Farming Costs in India

ভারতের কৃষিক্ষেত্রে সার সবসময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে এবং কৃষকদের খরচ কমাতে কেন্দ্র সরকার দীর্ঘদিন ধরেই সার ভর্তুকি (Fertilizer Subsidy) প্রদান করে আসছে। এবার ২০২৫ অর্থবছরের জন্য সরকার নতুন ভর্তুকি প্রকল্প ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের কাছে সার সহজলভ্য করা, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো এবং একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব কৃষিকাজকে উৎসাহিত করা।

Advertisements

ভর্তুকির কাঠামো

২০২৫ সালের নতুন সার ভর্তুকি প্রকল্প অনুযায়ী, সরকার ইউরিয়া, ডিএপি (DAP), এমওপি (MOP), এবং এনপিকে (NPK) সহ একাধিক রাসায়নিক সারের উপর ভর্তুকি বহন করবে। এতে কৃষকদের বাস্তব বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম দামে সার কিনতে হবে।

   

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো—

  • ইউরিয়ার দাম প্রতি বস্তা ২৬৬ টাকা বজায় রাখা হয়েছে।
  • ডিএপি-র দাম ১৩৫০ টাকা প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) রাখা হয়েছে, যেখানে সরকারের ভর্তুকি প্রায় ২,৫০০ টাকা।
  • এনপিকে ও এমওপি সারের উপরও উল্লেখযোগ্য ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।

জৈব সার ও সবুজ কৃষিতে জোর

এই নতুন প্রকল্পে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার ও বায়ো-ফার্টিলাইজারের উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হলো রাসায়নিক সারের অতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে কৃষকদের জৈব ও টেকসই কৃষির দিকে এগিয়ে দেওয়া। এজন্য বায়ো-ফার্টিলাইজারের জন্য অতিরিক্ত ভর্তুকি রাখা হয়েছে।

কৃষকদের জন্য লাভ

নতুন ভর্তুকি প্রকল্পের ফলে—

Advertisements
  • কৃষকের উৎপাদন খরচ কমবে।
  • সময়মতো সার পাওয়া সহজ হবে।
  • সারের কালোবাজারি ও কৃত্রিম সংকট কমানো যাবে।
  • টেকসই কৃষি ও মাটির উর্বরতা রক্ষা পাবে।

এক কৃষক বলেন, “বাজারে যদি সারের দাম এত বেশি হতো, আমাদের জন্য চাষ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত। সরকারের ভর্তুকির কারণে আমরা অন্তত সঠিক দামে সার পাচ্ছি।”

সরকারের ব্যয়

এই প্রকল্পের জন্য সরকার প্রায় ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। অর্থমন্ত্রী জানান, “আমরা চাই কৃষকরা স্বস্তিতে চাষ করতে পারেন। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষকদের সহায়তা করা আমাদের দায়িত্ব।”

বিশেষজ্ঞদের মত

কৃষি অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ভর্তুকি ব্যবস্থা কৃষকদের স্বল্পমেয়াদে উপকার করলেও, দীর্ঘমেয়াদে সারের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা মাটির স্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে। তাই রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার, ভার্মি কম্পোস্ট, এবং বায়ো-ফার্টিলাইজারের ব্যবহার বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।

সরকারের নতুন সার ভর্তুকি প্রকল্প ২০২৫ নিঃসন্দেহে কৃষকদের বড় সহায়তা করবে। এতে উৎপাদন খরচ কমবে, ফসলের ফলন বাড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তবে এর পাশাপাশি টেকসই কৃষি, মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ রক্ষার দিকেও সমান নজর দেওয়া জরুরি।