প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা (PMFBY- PM Crop Insurance Scheme) কৃষকদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পোকামাকড় বা রোগবালাইজনিত ফসল ক্ষতির বিরুদ্ধে আর্থিক সুরক্ষা দিতে চালু করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় প্রকল্প। খরিফ মৌসুমের জন্য এই বিমা নিবন্ধন ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ জুলাই। দেশজুড়ে কৃষকদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নোটিফাইড এলাকা ও নোটিফাইড ফসলের বিমা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ক্ষতির ক্ষেত্রে তারা অর্থনৈতিক সহায়তা পেতে পারেন।
যোজনার উদ্দেশ্য ও সূচনা:
এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি চালু হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে। এর মূল উদ্দেশ্য কৃষকদের আয়হানি রোধ করা, কৃষিজ ঝুঁকি কমানো এবং পরবর্তী মৌসুমের জন্য তাদের আর্থিকভাবে সক্ষম করে তোলা। স্কিমটি খরিফ ও রবি – দুই মৌসুমের ফসলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কৃষকদের মাত্র ন্যূনতম প্রিমিয়াম দিতে হয়—
খরিফ ফসলে ২% প্রিমিয়াম,
রবি ফসলে ১.৫% প্রিমিয়াম,
অতিরিক্ত প্রিমিয়াম কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলেই বহন করে।
যারা এই সুবিধা পাবেন-
নোটিফাইড এলাকায় চাষ করলে সকল কৃষকই এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। জমি মালিক কৃষকের পাশাপাশি বর্গাচাষি, লিজ নেওয়া কৃষক ও ঋণগ্রহীতা কৃষকেরাও যোগ্য। চাষ শুরু হওয়ার পর দুই সপ্তাহের মধ্যে আবেদন করতে হবে এবং জমির বৈধ কাগজপত্র থাকা বাধ্যতামূলক। যেসব ফসলের জন্য পূর্বে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি, শুধু সেসব ফসলেই বিমা দাবি করা যাবে।
কেন অনেক কৃষক সুবিধা পান না?
অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ থাকে যে ক্ষতির পরও কৃষক ক্ষতিপূরণ পান না। এর মূল কারণ, স্কিমটি শুধু নোটিফাইড এলাকায় এবং নির্দিষ্ট ফসলের ক্ষেত্রে কার্যকর। নন-নোটিফাইড এলাকায় ক্ষতি হলে কোনো ক্ষতিপূরণ মেলে না। এছাড়া ফসলের নির্ধারিত লাইফ-সাইকেলের বাইরে—আগে বা পরে—ক্ষতি হলে তা বিমার আওতাভুক্ত নয়।
আবেদনের জন্য দরকার—
পাসপোর্ট সাইজ ছবি,
ব্যাংক পাসবুক,
জমির খতিয়ান বা লিজ চুক্তিপত্র,
আধার/প্যান/ভোটার আইডি,
ঠিকানার প্রমাণ,
চাষ করা ফসলের ঘোষণা পত্র।
সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া:
কৃষকদের pmfby.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে ফার্মার’স কর্নার থেকে ‘Guest Farmer’ অপশন বেছে নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পরে লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। আবেদন সাবমিট করার পর সঙ্গে সঙ্গে পেমেন্ট করা যায় অথবা পরে করার অপশনও আছে। সফল পেমেন্টের পরে রসিদ ডাউনলোড করে রাখতে হবে।
কবে পাওয়া যাবে বিমার টাকা?
বিমার নিয়ম অনুযায়ী, দাবি জমা দেওয়ার ২১ দিনের মধ্যে বিমার টাকা প্রদান করতে হবে। বিলম্ব হলে কৃষক বার্ষিক ১২% হারে সুদ পাওয়ার অধিকারী। রাজ্যের দেরিতেও একই হারে সুদ দিতে হয়।


