দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে ৮ম বেতন কমিশনের শর্তাবলী (Terms of Reference – ToR)। সরকারের এই সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি ও আশার আলো। তিন সদস্যের এই কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি রঞ্জনা দেশাই, যিনি কমিশনের সুপারিশের মাধ্যমে বেতন, বোনাস, গ্র্যাচুইটি এবং পারফরম্যান্স-লিঙ্কড ইনসেনটিভ সংশোধনের প্রস্তাব দেবেন।
সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, কমিশনকে তার প্রস্তাব ১৮ মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে। প্রয়োজনে কমিশন ধাপে ধাপে আংশিক প্রতিবেদনও (interim report) দিতে পারবে, যদি কোনো বিষয়ে সুপারিশ আগে চূড়ান্ত করা যায়।
পেনশনভোগীদের অন্তর্ভুক্তির দাবি:
অল ইন্ডিয়া ডিফেন্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (AIDEF) সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যেন কমিশনের শর্তাবলীতে পেনশনভোগীদের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের মতে, বেতন কাঠামোর পাশাপাশি পেনশন কাঠামোর সংশোধনও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
গ্রামীণ ডাক সেবকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি: 8th Pay Commission ToR GDS
এদিকে, বিজেপি সাংসদ অম্বিকা জি লক্ষ্মীনারায়ণী ভাল্মিকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে ২.৭৫ লক্ষ গ্রামীণ ডাক সেবককে (GDS) ৮ম বেতন কমিশনের আওতায় আনার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, গ্রামীণ ডাক সেবকরা গ্রামীণ ভারতের যোগাযোগ ও ডাক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করেন। তাদের কাজ শহুরে ডাককর্মীদের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তারা এখনও কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
বর্তমানে গ্রামীণ ডাক সেবকরা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী হিসেবে গণ্য হন না, তাই তারা ৭ম বেতন কমিশনের অধীনও নন। তারা “অতিরিক্ত বিভাগীয় কর্মচারী” (extra-departmental employees) হিসেবে বিবেচিত হন এবং তাদের বেতন নির্ধারণ হয় পৃথক বিভাগীয় কমিটির মাধ্যমে। তারা ডাক পরিষেবা, মানি অর্ডার, ব্যাংকিং সেবা, আধার সম্পর্কিত কাজ এবং বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
৮ম বেতন কমিশনের সময়সীমা ও সম্ভাবনা:
বর্তমানে কমিশন তার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, ৮ম বেতন কমিশনকে ২০২৭ সালের এপ্রিলের মধ্যে তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। তবে কমিশন চাইলে এর আগেও রিপোর্ট জমা দিতে পারে। রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর সরকার তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেবে এবং সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতন পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
শেষ কথা:
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বেতন কমিশনের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এখন সবার নজর কমিশনের প্রস্তাব ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

