কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীদের বহুদিনের দাবি নিয়ে অবশেষে অর্থ মন্ত্রক পরিষ্কার বক্তব্য দিয়েছে। মন্ত্রকের মতে, ডিএ (ডিয়ারনেস অ্যালাউন্স) ও ডিআর (ডিয়ারনেস রিলিফ) বেসিক বেতনের সঙ্গে একীভূত করার কোনো প্রস্তাব বর্তমানে সরকারের বিবেচনায় নেই। এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এমন সময়ে, যখন ৮ম পে কমিশন (8th Pay Commission) নিয়ে চর্চা তুঙ্গে এবং কর্মীরা বেতন বৃদ্ধির আশা করছেন।
গুজবে লাগাম টানল অর্থ মন্ত্রক:
সোশ্যাল মিডিয়ায় চলা নানা খবরকে ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছে অর্থ মন্ত্রক। অনেকেই মনে করছিলেন শিগগিরই ডিএ-ডিআর মর্জার ঘোষণা আসতে পারে। কিন্তু মন্ত্রকের বক্তব্যে স্পষ্ট—বর্তমানে সরকার এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সরকারি সূত্রের দাবি, ডিএ-ডিআর মিলে গেলে বেতন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আসবে এবং সরকারি ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটবে।
কেন শুরু হয়েছিল মর্জারের দাবি?
৭ম পে কমিশন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় কর্মচারী সংগঠনগুলোর দাবি ছিল—ডিএ-ডিআর বেসিকে যোগ হোক। তাঁদের মতে, মূল্যস্ফীতি বাড়লে ডিএ বৃদ্ধির চাপ বাড়ে, ফলে বেসিক বেতনে এটি অন্তর্ভুক্ত করলে পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়বে। কিন্তু সরকার এই প্রস্তাব নিয়ে বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিএ বর্তমানে ৫৮%। এটিকে বেসিকে অন্তর্ভুক্ত করলে সরকারি ব্যয় GDP-এর ০.৫% পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাই আপাতত সরকার সময়মতো ডিএ রিভিশন চালু রাখবে।
৮ম পে কমিশন নিয়ে আশা ও হতাশা দুই-ই:
৮ম পে কমিশন ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এতে ৫০ লাখ বর্তমান কর্মী এবং ৬৫ লাখ পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। অনুমান করা হচ্ছে, নতুন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৪৬ হতে পারে, যার ফলে গড় বেতন ৩০-৪০% পর্যন্ত বাড়বে। তবে ডিএ-ডিআর মর্জার না হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে।
আগামী পরিকল্পনা কী?
অর্থ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন—কর্মীদের কেবল ডিএ বাড়ার দিকেই ভরসা রাখতে হবে। মূল্যস্ফীতি ৫.৪৯% হওয়ায় আগামী ডিএ বাড়তে পারে ৩%। আর্থিক পরিকল্পনা হিসেবে সঞ্চয়ের পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত আয় উৎস তৈরি করাও প্রয়োজন।
মোটের উপর, ডিএ-ডিআর মর্জার না হওয়া কর্মীদের জন্য হতাশার হলেও, ৮ম পে কমিশন থেকে বড় সুবিধা পাওয়ার আশা এখনও অটুট। সরকার জানিয়েছে, কর্মীদের সব সুবিধা যথাসময়ে দেওয়া হবে।
