২,০০০ টাকার বেশি UPI পেমেন্টে ১৮% GST! জানুন বিস্তারিত

নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, সরকার এখন উচ্চমূল্যের UPI লেনদেনের উপর GST (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) আরোপের একটি প্রস্তাব নিয়ে বিবেচনা করছে। মিডিয়া রিপোর্ট…

labour-secretary-announcement-upi-atm-pf-withdrawal-may-june

নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, সরকার এখন উচ্চমূল্যের UPI লেনদেনের উপর GST (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) আরোপের একটি প্রস্তাব নিয়ে বিবেচনা করছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২,০০০ টাকার বেশি মূল্যের যেকোনো ডিজিটাল UPI লেনদেনে ১৮ শতাংশ GST আরোপ করা হতে পারে। এটি কার্যকর হলে, পিয়ার-টু-পিয়ার (P2P) এবং পিয়ার-টু-মার্চেন্ট (P2M) — উভয় ধরনের লেনদেনেই এই কর কার্যকর হতে পারে।

Advertisements

যদিও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে এই বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা বা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে খবরে প্রকাশ, সরকার এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভাব্যতা ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে। ডিজিটাল লেনদেনের উপর কর আরোপের বিষয়টি ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।

   

অন্যদিকে, ছোট ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করতে গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা একটি ১,৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্প অনুযায়ী, ২,০০০ টাকার নিচের সমস্ত BHIM-UPI পিয়ার-টু-মার্চেন্ট (P2M) লেনদেন শূন্য খরচে (Zero MDR) সম্পন্ন হবে এবং এর উপর ০.১৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হবে।

এই প্রকল্প ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। সরকারের লক্ষ্য হলো, ছোট ব্যবসায়ী এবং খুচরা বিক্রেতাদের ডিজিটাল অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত করা এবং নগদহীন লেনদেনকে আরও সহজ ও জনপ্রিয় করে তোলা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে সরকার যখন ডিজিটাল লেনদেনকে উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দিচ্ছে, অন্যদিকে উচ্চমূল্যের UPI লেনদেনে জিএসটি আরোপের চিন্তা কিছুটা বিপরীতমুখী পদক্ষেপ হতে পারে। এর ফলে সাধারণ গ্রাহক এবং ব্যবসায়ী উভয়ের ওপর অতিরিক্ত বোঝা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে সরকার এই সিদ্ধান্তের আগে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করছে। অর্থ মন্ত্রকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “আমরা এখনো প্রাথমিক আলোচনার স্তরে আছি। ডিজিটাল লেনদেনকে নিরুৎসাহিত না করে বরং সুষ্ঠু কর কাঠামোর মধ্যে আনার লক্ষ্যে এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।”

Advertisements

এদিকে, মার্চ ২০২৫-এ ভারতের মোট GST সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১.৯৬ লাখ কোটি টাকা, যা এ যাবতকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এই মাসে রাজস্ব আদায় ৯.৯ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দেশীয় লেনদেন থেকে GST সংগ্রহ হয়েছে ১.৪৯ লাখ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৮.৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, আমদানিকৃত পণ্যের উপর রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে ৪৬,৯১৯ কোটি টাকা, যা ১৩.৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি।

বিশ্লেষকদের মতে, মার্চ মাসের এই রাজস্ব বৃদ্ধির হার দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত বহন করে। তবে তারা এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভবিষ্যতের যেকোনো নতুন কর নীতি বা আর্থিক সিদ্ধান্ত জনগণের উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে সতর্কভাবে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সরকারের এই সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং বর্তমান প্রণোদনার সংমিশ্রণ একটি দ্বিমুখী বার্তা দিচ্ছে। একদিকে ডিজিটাল লেনদেনকে জনপ্রিয় ও লাভজনক করে তোলা হচ্ছে ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য, অন্যদিকে উচ্চমূল্যের লেনদেনকে কর কাঠামোর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার কীভাবে এই দুটি উদ্যোগকে সমন্বয় করে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।