নয়াদিল্লিতে ভারতীয় (Agriculture) বাণিজ্য ও শিল্প সংস্থা (ICC) আয়োজিত ‘কৃষি বিক্রম’ থিম্যাটিক সেশনে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, ভারতের কৃষি ও মৎস্য রপ্তানি বর্তমানে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে, যদি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, উন্নত প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডিংয়ের উপর জোর দেওয়া হয়।
এই সেশনে তিনি ভারতের (Agriculture) কৃষি রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন এবং বলেন, জাম, লিচু, আনারসের মতো নতুন কৃষি পণ্য বিশ্ববাজারে ভারতের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। এছাড়া, তিনি জানান, দেশের ১,৪০০টি মান্ডি (কৃষি বাজার) ই-ন্যাম (e-NAM) প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত ও শক্তিশালী করা হয়েছে, যা কৃষকদের জন্য স্বচ্ছ মূল্য আবিষ্কারের সুবিধা প্রদান করছে।
কৃষি রপ্তানির সম্ভাবনা ও প্রক্রিয়াকরণের গুরুত্ব (Agriculture)
মন্ত্রী গোয়েল (Agriculture) বলেন, ভারতের কৃষি ও মৎস্য রপ্তানি বর্তমানে ৪-৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি রয়েছে। তবে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, উন্নতমানের প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে এই রপ্তানি পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝান, ইন্ডিগো ফ্লাইটে যাত্রীরা ২৫০-৪০০ টাকায় রাইস-ডাল, পোহা বা উপমার মতো খাবারের প্যাকেট কিনে থাকেন, যার প্রকৃত মূল্য মাত্র ৪০ টাকা।
এই উদাহরণের মাধ্যমে তিনি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ব্র্যান্ডিংয়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ৪ কোটি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষের জন্য উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে, যা ভারতের রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।নতুন কৃষি পণ্যের
বিশ্ববাজারে প্রবেশ
ভারত সরকারের (Agriculture) উদ্যোগের ফলে জাম, লিচু, আনারসের মতো ফল বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। গোয়েল জানান, মোদী সরকারের মিলেট (শস্যজাতীয় খাদ্য) প্রচারের কারণে বিশ্বব্যাপী এই পুষ্টিকর খাদ্যশস্যের চাহিদা বেড়েছে। ফলে, দেশে মিলেটের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা ভারতের কৃষি পণ্যের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ। এই উদ্যোগগুলো ভারতকে বিশ্বের কৃষি বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।ই-ন্যাম
প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা
কৃষকদের স্বচ্ছ ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ই-ন্যাম প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মন্ত্রী জানান, ১,৪০০টিরও বেশি মান্ডি এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। এর ফলে ১.৭৯ কোটি কৃষক এবং ২.৬৩ লক্ষ ব্যবসায়ী নিবন্ধিত হয়েছেন।
ই-ন্যামের মাধ্যমে ১১.০২ কোটি মেট্রিক টন পণ্য এবং ৪২.৮৯ কোটি ইউনিট (বাঁশ, পান, নারকেল, লেবু, মিষ্টি ভুট্টা) মিলিয়ে প্রায় ৪.০১ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। (Agriculture) এই প্ল্যাটফর্ম কৃষকদের সরাসরি বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করে, মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা হ্রাস করে এবং তাদের আয় বাড়ায়।সরকারি
উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
গোয়েল জানান, (Agriculture) সরকার কৃষকদের সরকারি ভর্তুকির উপর নির্ভরশীল না করে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য উৎসাহিত করছে। কৃষি রপ্তানি বাড়াতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে কৃষি রপ্তানি নীতি (AEP) এবং প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (PLI) স্কিম।
এছাড়া, জৈব পণ্যের রপ্তানি ২০২৮ সালের মধ্যে ২০,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার কৃষক ও কৃষি উৎপাদক সংগঠনগুলোকে দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, বিপণন এবং প্যাকেজিংয়ের জন্য সহায়তা প্রদান করছে।
ইসলামি আইনে ফাঁসি থেকে বাঁচতে পারেন ভারতীয় হিন্দু নিমিশা, ‘রক্তের মূল্য’ আইন কী?
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
কৃষি রপ্তানি (Agriculture) বাড়ানোর পথে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন—অপর্যাপ্ত প্রক্রিয়াকরণ পরিকাঠামো, গুণমানের অসঙ্গতি এবং উচ্চ লজিস্টিক খরচ। তবে, সরকারের সুস্পষ্ট নীতি এবং ডিজিটাল পরিকাঠামোর সম্প্রসারণ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। মন্ত্রী বলেন, ভারতের কৃষি রপ্তানি ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে।জনগণের প্রতিক্রিয়া ও প্রত্যাশা
কৃষক ও কৃষি (Agriculture) বিশেষজ্ঞরা এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ কৃষকরা ই-ন্যাম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন, কারণ এটি তাদের পণ্যের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করছে। জৈব পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্য কৃষকদের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে, যা টেকসই কৃষির প্রচারে সহায়ক হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের এই ঘোষণা ভারতের কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। প্রক্রিয়াকরণ, ব্র্যান্ডিং এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভারত বিশ্বের কৃষি বাজারে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। এই উদ্যোগ কৃষকদের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।