২০২৬ সালের বাজেটে পোলট্রি, ডেয়ারি এবং ব্যাঙ্কিং খাতে বড় অঙ্ক

২০২৫-২৬ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে (Budget 2026) পোলট্রি, ডেয়ারি এবং ব্যাঙ্কিং খাতের জন্য উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ এবং নীতিগত উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে। যা এই খাতগুলোর উন্নয়ন ও…

Budget 2026

২০২৫-২৬ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে (Budget 2026) পোলট্রি, ডেয়ারি এবং ব্যাঙ্কিং খাতের জন্য উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ এবং নীতিগত উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে। যা এই খাতগুলোর উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের উপস্থাপিত এই বাজেটে কৃষি ও সম্পৃক্ত খাত, বিশেষ করে পোলট্রি ও ডেয়ারি, এবং আর্থিক পরিষেবা খাতের জন্য বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

এই খাতগুলো ভারতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এই বাজেটের মাধ্যমে সরকার এই খাতগুলোর উৎপাদনশীলতা, স্থায়িত্ব এবং প্রতিযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে। পোলট্রি খাত ভারতীয় কৃষি অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে পোলট্রি খাতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

   

কৃষকদের জন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (কেকেসি) ঋণের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা পোলট্রি চাষীদের জন্য স্বল্পমেয়াদি আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। এই ঋণ সুবিধা বর্তমানে ৭.৭ কোটি কৃষক, মৎস্যজীবী এবং পোলট্রি চাষীদের জন্য উপলব্ধ। এছাড়া, জাতীয় পশুসম্পদ মিশন (এনএলএম) এবং পোলট্রি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের মাধ্যমে উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে পোলট্রি উৎপাদন বাড়ানো, উন্নত জাতের মুরগি প্রজনন এবং ফিডের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করার কথা ভাবা হয়েছে। ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম ডিম উৎপাদক এবং ষষ্ঠ বৃহত্তম মাংস উৎপাদক দেশ হিসেবে ইতিমধ্যেই স্বীকৃত। ২০২০-২১ সালে ভারতের ডিম উৎপাদন ১২২.১১ বিলিয়ন এবং পোলট্রি মাংস উৎপাদন ৪.৩৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন ছিল, যা মোট মাংস উৎপাদনের প্রায় ৫০%।

এই বাজেটের মাধ্যমে পোলট্রি খাতে আরও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে এই প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত হবে। ডেয়ারি খাত ভারতের অর্থনীতির আরও একটি প্রধান খাত, যা জাতীয় অর্থনীতির ৫% অবদান রাখে এবং ৮ কোটির বেশি কৃষককে সরাসরি কর্মসংস্থান প্রদান করে। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে মৎস্য, পশুপালন এবং ডেয়ারি মন্ত্রণালয়ের জন্য ৭,৫৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩৭% বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া, ২০২১-২০২৬ মেয়াদের জন্য সংশোধিত জাতীয় ডেয়ারি উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ২,৭৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ডেয়ারি পরিকাঠামো আধুনিকীকরণ, বাজারে প্রবেশাধিকার উন্নত করা এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদক, যা বিশ্বের মোট দুধ উৎপাদনের ২৩% অবদান রাখে।

২০১৪-১৫ সালে দুধ উৎপাদন ১৪৬.৩ মিলিয়ন টন থেকে ২০২১-২২ সালে ২২১.০৬ মিলিয়ন টনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজেটে ডেয়ারি প্রক্রিয়াকরণ এবং পণ্য বৈচিত্র্যকরণের জন্য প্রায় ৮৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

Advertisements

এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এএইচআইডিএফ) এর মাধ্যমে ১৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩,৫০০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হবে।

এই উদ্যোগগুলো গ্রামীণ কৃষকদের, বিশেষ করে ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েছে।ব্যাঙ্কিং খাতের জন্য বাজেটে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং, ফিনটেক উদ্ভাবন এবং ক্রেডিট প্রাপ্তির সুবিধা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড ঋণের সীমা বৃদ্ধি এবং এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ ব্যাঙ্কিং খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করবে।

এছাড়া, সমবায় সমিতিগুলোর জন্য বিকল্প ন্যূনতম করের হার ১৮.৫% থেকে ১৫% কমানো হয়েছে, যা সমবায় ব্যাঙ্কগুলোর জন্য আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসবে। বাজেটে ডিজিটাল পেমেন্ট এবং ফিনটেক উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার ঘোষণা ব্যাঙ্কিং খাতে নতুন প্রযুক্তির প্রসারে সহায়ক হবে।

এই উদ্যোগগুলো গ্রামীণ এলাকায় আর্থিক পরিষেবার প্রাপ্যতা বাড়াবে এবং পোলট্রি ও ডেয়ারি খাতে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।

আইসিকে গালিগালাজ কাণ্ডে আদালতে আত্মসমর্পণ অনুব্রতর!

এই বাজেট ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য একটি ব্যাপক পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। পোলট্রি ও ডেয়ারি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ব্যাঙ্কিং খাতে ডিজিটাল উদ্ভাবনের মাধ্যমে ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।