Parvez Musharraf Tajmahal: মুশারফের প্রিয় ছিল তাজমহলের অলিন্দে বন্দি স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো সময়

গোপনে ভারতের মাটিতে ঢুকে রুদ্ধশ্বাস কিছু সময়, আর জীবনের সেরা মুহূর্ত সবই ভারত ঘিরেই ছিল। প্রয়াত পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ (Parvez Musharraf)।

Parvez Musharraf tajmahal

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: গোপনে ভারতের মাটিতে ঢুকে রুদ্ধশ্বাস কিছু সময়, আর জীবনের সেরা মুহূর্ত সবই ভারত ঘিরেই ছিল। প্রয়াত পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ (Parvez Musharraf)। পাক সামরিক শাসকদের আপাত সর্বশেষ প্রতিনিধি ছিলেন।

কারগিলের যুদ্ধের সময় ভারতের মাটিতে গোপনে ঢুকে বেশ কয়েক ঘন্টা কাটানোর অভিজ্ঞতা যেদিন সর্বসমক্ষে এনেছিলেন পারভেজ মুশাররফ সেদিনই বিশ্ব জুড়ে হই হই পড়ে গেছিল। কারগিল ঘিরে ভারত-পাক তুমুল সংঘর্ষের মাঝে পাকিস্তানের ততকালীন প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত সুরক্ষা বলয় নিয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখা পার করে ভারতের দিকে ঢুকে পড়েন।

   

এই ঘটনার কথা তিনি যখন বলেন, ততদিনে কারগিলের আকাশে আর কামানের গোলার শব্দ নেই। তবে সেই কারগিল সংঘর্ষের রেশ আজও আছে। সেই কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানের তরফে সেনা অনুপ্রবেশ ও ভারতীয় ভূখন্ডে বাঙ্কার তৈরি করে হামলার নির্দেশ পারভেজ মুশাররফের পরিকল্পনা। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সর্বশেষ সেনা শাসক। যদিও প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর সামরিক পোশাকের পরিবর্তন করেন। আপাত দৃষ্টিতে পাকিস্তানের যতজন সেনা শাসক ছিলেন তাদের মতো ততটা নৃশংস না হলেও মুশাররফের বিরুদ্ধেও একাধিক বিতর্কিত মামলা চলেছিল।

পাক শাসন থেকে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর আর যেমন সকল পাক শাসকরা দেশ ছেড়ে পালানোর নজির রেখেছেন সেই পথ নিয়েছিলেন পারভেজ মুশাররফ। সৌদি আরব, ইংল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি হয়ে পাকিস্তানে ফিরে এসে নির্বাচনে নামার ইচ্ছা জানাতেই একের পর এক মামলায় তিনি জড়ান। এর মধ্যে আছে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত করার অভিযোগ।

পাক সেনার প্রাক্তন জেনারেল ও প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের সময় তাঁর পরিবার পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নেয়।

পারভেজ মুশাররফ করাচির সেন্ট প্যাট্রিক হাই স্কুল ও ফোরম্যান কলেজ থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনড অফিসার হিসেবে যোগ দান করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে মুশাররফ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট ছিলেন। পরবর্তীতে পাক শাসক হয়ে দিল্লি সফর করেন। সেই সফরে তাঁর পৈত্রিক বাড়িতে যান।

প্রয়াত মুশারফের অত্যন্ত প্রিয় ছবি তাঁর স্ত্রী শেবার সাথে তাজমহলের শ্বেত পাথরের বিখ্যাত অলিন্দে যুগলে ক্যামেরা বন্দি হওয়া। মুশাররফ নেই। ছবিটা থাকল। যে দেশে গোপনে সেনা অনুপ্পবেশ করিয়েছিলেন সেই ভারতেই তিনি জীবনের সেরা কয়েকটি মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন।