প্রসেনজিৎ চৌধুরী: ‘আমরা তৈরি আছি’, বার্তা দিয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিরোধী সিপিআইএম সহ বামদলগুলির উদ্যোগে তৈরি বিখ্যাত রেড ভলান্টিয়ার্স (Red Volunteers)। অদৃশ্য জীবাণু ঘাতকের বিরুদ্ধে লড়তে দার্জিলিং থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা- সবকটি জেলার যত সদস্য রয়েছেন সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কারণ, উৎসব শেষে করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে চলেছে বলেই আশঙ্কা।
লোকসভার পর বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বামেরা শূন্য হয়ে গেছে। কে বলবে সিপিআইএম এই রাজ্যে টানা সাড়ে তিন দশকের সরকার চালিয়েছে। এখন পরিস্থিতি এমন যে জামানত বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তার পরেও সিপিআইএমের মূল উদ্যোগে তৈরি রেড ভলান্টিয়ার্সদের ভূমিকা দেখেছেন রাজ্যবাসী। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস, বিরোধী দল বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা নিজেদের মোবাইলে স্থানীয় রেড ভলান্টিয়ার্সদের নাম ও নম্বর সেভ করেছেন। দুই দলের বহু নেতার স্পষ্ট মতামত, বলা তো যায় না বিপদ কখন হয়। তখন আর কেই বা আছে !
রেড ভলান্টিয়ার্স মানেই করোনা সংক্রমণ সংকটে বিপদের বন্ধু। যেভাবে লকডাউনের মাঝে এই লাল স্বেচ্ছাসেবকরা এগিয়ে এসেছিলেন ‘সিংহের মতো সাহস ও বাজপাখির মতো চোখ’ নিয়ে তাতে রাজ্য দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল আলোচিত হয় সংগঠনটি। বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলির সদস্যদের নিয়ে তৈরি রেড ভলান্টিয়ার্স ফের সক্রিয়।
সোশ্যাল সাইটে রেড ভলান্টিয়ার্স গ্রুপে বারবার আবেদন জনানো হচ্ছে পরিস্থিতি বুঝে বাইরে বের হওয়ার। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছেন রেড ভলান্টিয়ার্স সদস্যরা। পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ। উৎসব চলছে। যে যার মতো আনন্দ করছেন।
শারোদৎসবে প্রবল ভিড় ও উদাসীনতার কারণে করোনা সংক্রমণের বড়সড় আশঙ্কায় বুক কাঁপছে চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের আশঙ্কা, অতি দ্রুত বড়সড় সংক্রমণ ঢেউ আসতে চলেছে। তাঁদের মতে এর কারণ উৎসবে উদাসীন হয়ে ঘোরা অন্যতম কারণ।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত ও সতর্কতা পেয়েই রেডভলান্টিয়ার্স সদস্যরা আসন্ন যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়েছেন। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার তাঁদের ভূমিকা আরও জবরদস্ত হবে এমনই আশা করছেন সদস্যরা। উৎসবের মাঝেও চলছে করোনা আক্রান্তদের জন্য পরিষেবা।
অভিযোগ, রাজ্য সরকার বাইরে বের হওয়ার নিয়ম শিথিল করতেই মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় বিপদ ডেকে এনেছে। আসন্ন বিপদের সতর্কতা দিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট। বলা হয়েছে, উৎসবের মাঝে দেশে ফের বাড়ল দৈনিক করোনা সংক্রমণ। বেড়েছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮,৯৮৭ জন। মৃত ২৪৬ জন। তবে একদিনে সুস্থ হয়েছেন ১৯,৮০৮ জন। করোনা আক্রান্তের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম স্থানে। রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ১৫,৭৮,৪৮২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮,৯৩৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৫,৫১,৮৯০জন।