এই জন্যই তিনি অন্য ফুটবলারদের থেকে আলাদা। ২০১৯ থেকে টানা ৩৫টি ম্যাচে অপরাজিত লিওনেল মেসির (Messi) আর্জেন্টিনা। স্বাভাবিকভাবেই অনেকে মনে করছেন, ৩৬ বছর পর ফের হয়তো বিশ্বকাপ পেতে পারে আর্জেন্টিনা। সেক্ষেত্রে মেসির হাতেও কাপ দেখার স্বপ্নপূরণ হবে। আর এই কারণেই কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই অনেকে আর্জেন্টিনাকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন বলতে শুরু করে দিয়েছে। আর সেখানেই আপত্তি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসির।
সরাসরি বলে দিয়েছেন, যাঁরা ভাবছেন ভাবুন। কিন্তু তিনি এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে কিছু ভাবতেই রাজি নন। তাঁর এখন শুধুই চিন্তা, ২২ নভেম্বর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে খেলা নিয়ে।শুধুই টানা ৩৫টি ম্যাচে অপরাজিত থাকা নয়। একটিও ম্যাচ না হেরে ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকা জিতেছে স্কালোনির দল। আর সিনিয়র পর্যায়ে দেশের হয়ে প্রথম বড় সাফল্য মেসির। কোপায় যে ফর্মে পুরো দল খেলেছে, তাতে বিশ্বকাপ শুরুর আগে স্কালোনির দলের উপর মানুষের ভরসা আরও বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু মেসি এসব তত্ত্বকে গুরুত্বই দিতে চাইছেন না। মাথায় শুধু ভাবনা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ নিয়ে।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য এই মুহূর্তে আবুধাবিতে রয়েছে আর্জেন্টিনা। সোমবার থেকে আবুধাবির আল নাহিয়ান স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিসও শুরু করে দিয়েছেন মেসিরা। আর্জেন্টিনার প্রথম দিনের প্র্যাকটিস দেখার জন্য স্টেডিয়ামে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে বুধবার একটি প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলবে স্কালোনির দল। তার আগে ৮৬’র বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করা ভালদানোর টিভি শো-‘ইউনিভার্সো ভালদানো’-তে মেসি বলেছেন, “কোনও প্রতিপক্ষই দুর্বল নয়। যে কোনও প্রতিপক্ষকেই হারানো কঠিন। এটা তো ঠিক, আমরা ইউরোপের দলগুলির বিরুদ্ধে খুব বেশি ম্যাচ খেলিনি।
আবার এটাও ঠিক, ওরাও লাতিন আমেরিকার দলগুলির বিরুদ্ধে বেশি ম্যাচ খেলতেও পছন্দ করে না। ইউরোপের দলগুলি জানে, লাতিন আমেরিকার দলগুলিকে হারানো কঠিন। নিজেদের দলের ক্ষেত্রে এটুকু বলতে পারি, ভাল ফর্মে থেকেই এবার আমরা কাতার যাচ্ছি। তবে কিছুতেই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নের তকমা নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছি না। শুধু আবেগে ভেসে লাভ নেই। বিশ্বকাপের মতো কঠিন প্রতিযোগিতায় খেলতে নামার আগে চূড়ান্ত বাস্তববাদী হতে হবে। ম্যাচ ধরে ধরে বিশ্লেষণ করে এগোতে হবে। আর তাই আমাদের মাথায় এই মুহূর্তে চিন্তা শুধু প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ সৌদি আরব নিয়ে।’
আর্জেন্টিনার বাইরে ফুটবল সমর্থকরা মনে করছেন, ব্রাজিল কিংবা ফ্রান্সের হাতেও উঠতে পারে বিশ্বকাপ। মেসিও নিজেদের আলোচনার বাইরে রেখে চ্যাম্পিয়নশিপের প্রশ্নে ব্রাজিল আর ফ্রান্সের কথা বলছেন। ‘বেশ কয়েকজন ফুটবলার চোটের জন্য এবার কাতার যেতে না পারলেও, ফ্রান্স দারুণ দল। বিশ্বকাপ জেতানোর মতো বেশ কিছু ফুটবলার রয়েছে ওদের দলে। তাছাড়া অনেকদিন ধরেই একজন কোচই ফ্রান্স দলটাকে নিয়ে কোচিং করাচ্ছেন। যার মধ্যে আবার একবার দলটাকে চ্যাম্পিয়নও করেছেন। তাই ফ্রান্স এবারও খুবই শক্তিশালী।’ব্রাজিল সম্পর্কে মেসির বক্তব্য হল, ‘নেমারের মতো ফুটবলার রয়েছে। তার উপর ওদের আক্রমণভাগ ভীষণই ভাল। আমরাও অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়ব। কিন্তু এই মুহূর্তে ফাইনাল না দেখে শুধুই প্রথম ম্যাচটা দেখছি আমরা।’