গোরু পাচার তদন্তে বীরভূম (Birbhum) জেলা তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) আসানসোল জেলে বন্দি। তার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন তিহার জেলে। আর অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে দিল্লি ডেকে জেরায় কী কথা টেনে বের করেছে ইডি তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) মধ্যে চরম উদ্বেগ কাজ করছে। সেই উদ্বেগ কাটাতেই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) দিলেন ভোকাল টনিক। শনিবার তিনি বীরভূমে তৃ়ণমূলের এক রাজনৈতিক সভায় বলেন,বাঘ ফিরে এলে শিয়ালরা লেজ গুটিয়ে পালাবে।
- রাস্তায় জনগণ বলেছিল ‘গোরু চোর, গোরু চোর’
- মমতার নজরে কেষ্ট একজন বীর
- ফিরহাদ বললেন বীরভূমের বাঘ
- গোরু পাচার তদন্তে অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) জেলে বন্দি
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আস্থাভাজন অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)। বিএসএফের কয়েকজন অফিসারের সাথে যোগসাজসে বাংলাদেশে গোরু পাচার তদন্তে গ্রেফতার অনুব্রত। তাকে জেলে ঢোকানোর পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে ফেরাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। দলনেত্রীর মন্তব্য রেশ ধরেই কেষ্টকে ‘বীরভূমের বাঘ’ বলেছেন ফিরহাদ।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, বনের বাঘ না থাকলে শিয়ালরা লাফালাফি করে। বাঘ ফিরে এলে শিয়ালরা লেজ গুটিয়ে পালায়। বীরভূমের বাঘকে তোমরা কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছ। সারাজীবন আটকে রাখতে পারবে না। বাঘ বেরিয়ে এলে শিয়ালরা সব খাঁচায় ঢুকে যাবে।
গোরু পাচার মামলায় তদন্ত করতে নেমে অনুব্রত মণ্ডলের নামে জেতা লটারির টিকিট নিয়ে সন্দেহ জেগেছে তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের। জেলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, বিপুল টাকার লটারি কেলেঙ্কারিতে ক্রমে জড়াচ্ছেন অনুব্রত। গত দুদিন বীরভূমের লটারির দোকানে জিজ্ঞাসবাদ করে তথ্য নেওয়ার পর শনিবার আসানসোল সংশোধনাগারে উপস্থিত হন তদন্তকারী অফিসাররা।
এর পরেই বীরভূম থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে বাঘ বলেছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়েছে। তিনি একযোগে সিপিআইএম ও বিজেপিকে ‘শিয়াল’ বলে নিশানা করেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
গোরু পাচারের বিপুল আর্থিক বেআইনি লেনদেনের তদন্তে অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর থেকে বীরভূমে গত দু মাসে তৃণমূল সমর্থনে ভাঙন ধরছে। জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল ছেড়ে সিপিআইএমে যোগদান চলছে। বিজেপি ছেড়েও বাম শিবিরে যাওয়া অব্যাহত। একের পর এক বড় জনসভা করেছে বাম শিবির। বীরভূম জেলা সিপিআইএমের দাবি, অনুব্রতর তৈরি করা ভয় ভাঙছে।
গত বিধানসভা ভোটে বীরভূমের অতি স্পর্শকাতর নানুর কেন্দ্র সিপিআইএমের থেকে ছিনিয়ে নেন অনুব্রত মণ্ডল। আর পুর নির্বাচনে বিজেপি নিশ্চিহ্ন হয়। দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসে সিপিআইএম। অনুব্রত নিজে স্বীকার করেছিলেন, বাম সংগঠন সক্রিয়। বামফ্রন্ট আমলে বীরভূমে ছিল সিপিআইএমের আধিপত্য। তারপর অনুব্রতর নেতৃত্বে তৃণমূল দাপট শুরু হয়।