দুর্গাপূজা (Durga puja) বিসর্জনের মাঝে বুধবার হড়পা বান (Flash Flood) এসে বিপর্যয়ের তৈরি করেছে মালবাজারে। স্রোতে ভেসে গেছেন বহু। তাঁরা নিখোঁজ। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মালবাজার (Malbazar) জুড়ে হাহাকার চলছে। এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে বালির বস্তা দিয়ে নদীর স্রোত ঘুরিয়ে দেওয়া চরম প্রশাসনিক গাফিলতি। বিস্ফোরক দাবি করলেন সিপিআইএম (CPIM) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)।
সেলিমের অভিযোগ, মাল নদীর স্রোত যে দিকে বইছিল সেদিকে বইতে না দিয়ে বালির বস্তা দিয়ে স্রোতের গতিপথ বদলে দিয়েই বিপত্তি। জেলা ও মালবাজার স্থানীয় প্রশাসন যদি বস্তা না ফেলে গতি বদলাতেন তাহলে হড়পা বান এলেও এমন বিপর্যয় হতো না। তিনি দাবি করেছেন, যে দিকে বিসর্জন করার ব্যবস্থা করা হয় সেই দিকেই স্রোতের গতিপথ ঘোরানো ছিল।
সিপিআইএমরাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “মাল মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন ৩১সি জাতীয় সড়কে মাল নদীর ব্রিজের নীচে মাঝে খানিকটা বালির চর রেখে দুপারে বয়ে চলা মাল নদীর পৌর এলাকা ঘেঁসে বয়ে যাওয়া স্রোতকে বালি ও পাথরের বাঁধ দিয়ে আটকে প্রতিমা বিসর্জনের গাড়ি ও মানুষের যাতায়াত সহ ঐ মাঝের চরে জনসমাগমের ব্যবস্থা করে মাল পৌরসভা ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
মর্মান্তিক এই ঘটনার এক ও অন্যতম কারণ পৌরসভা ও প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর ডান হাতি প্রবাহকে বালির বাঁধে আটকে নদীর বুকে বিসর্জনের মেলা প্রাঙ্গণ তৈরী করা। এযাবৎ দফায় দফায় বহুবার, এমনকি দিন কয়েক আগেও এই ডান হাতি স্রোত হঠাৎ করেই ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
মাল শহরের দিক থেকে এসে ঐখানে মাল নদীর ডানহাতি প্রবাহে বিসর্জন করে ফিরলে কখনোই এত ভয়াবহ ঘটনার কোনো সম্ভাবনাও ছিলোনা। সড়ক সেতুর নীচে মাল নদীর বুকে ঐটুকু জায়গায় কার্নিভালের জৌলুসে মানুষকে সামিল করার খামখেয়ালিতে শিশু মহিলা বৃদ্ধসহ এতগুলি প্রাণের মর্মান্তিক সলিল সমাধি ঘটলো। না জানি উদ্ধার না করা আরো ক’জন মানুষ ভেসে গেলো/নিখোঁজ রইলো।
মাঝরাত থেকে ভোর ও সকাল অবধি ঘটনাস্থল থেকে ৫/৬ কিমি পর্যন্ত দুপারের গ্রামবাসীকে নিয়ে প্রবল বৃষ্টি ও অন্ধকারে আমাদের কমরেডরা মাল ও নেওড়া নদীর মিলন স্থলের বিস্তৃর্ণ নদীবক্ষ তল্লাশি চালালেও কোথাও সকাল আটটা পর্যন্ত প্রশাসনের, পুলিশের বা বিপর্যয় মোকাবিলার কোন টীমের দেখা পায়নি। এমনকি তিস্তা সেতুর নীচেও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
শুধু সমবেদনা নয়, শোকার্ত পরিবেশেও সব স্তরে স্বজন হারানো ও নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষের পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানো এবং দোষীদের কঠোর শাস্তিসহ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ও নিখোঁজ মানুষদের উদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠিত করা জরুরী।।”