নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ২ হাজারেরও কম ভোটে হেরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে হলে, নিয়ম মতো ছ’মাসের মধ্যে কোনও একটি কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে তাঁকে।
নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, ভবানীপুরসহ তিন কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যাশা মতোই এবার ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী। উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। ভবানীপুরে প্রিয়ঙ্কার জয়ের ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত দিলীপ ঘোষ।
গতকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় তথাগত রায় লিখেছিলেন, ‘মুলোরা এমন ভাব করছে যেন মমতা উপনির্বাচন জিতেই বসে আছেন ! কিন্তু উপনির্বাচনটা হচ্ছে কেন? মমতা হেরে গিয়েছিলেন বলেই না ! সুপার হেভিওয়েট হওয়া সত্ত্বেও ! প্রিয়াঙ্কা যেমনি এন্টালিতে হেরেছিলেন মমতা তেমনি নন্দীগ্রামে হেরেছিলেন। যিনি একবার হেরেছেন তিনি দ্বিতীয়বারও হারতে পারেন!’ এবার খানিকটা একই সুর শোনা গেল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়তেও। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি জেতার জন্যই ভবানীপুরে লড়াই করছে। ভবানীপুরে আমাদের প্রার্থীই জিতবে। মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে গোটা তৃণমূল পার্টিটাই উঠে যাবে। মমতা ব্যানার্জি হারার ভয় পাচ্ছেন। তাই সব মন্ত্রীদের পাড়ায় পাড়ায় ঘোরাচ্ছেন।’
২০১৪ সালে মোদী ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। ক্ষমতায় এসেছিল এনডিএ সরকার (NDA)। সেবছরেরই আগস্টে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। শুরুতেই দলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করেছেন। ছ’বছর পর, ২০২০ সালের আগস্টে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (বিজেওয়াইএম) সহ-সভাপতি করা হয়।
২০১৫ সালে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কলকাতা পৌর পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এই তরুণ নেত্রী। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের স্বপন সমাদরের কাছে হেরে যান। চলতি বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রতীকে এন্টালি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু ৫৮২৫৭ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের স্বর্ণকমল সাহার কাছে হেরে যান। কর্পোরেশন ইলেকশনেও জিততে পারেননি বলে তঁকে ক্রমাগত কটাক্ষ করছেন তৃণমূল সমর্থকরা। অন্যদিকে, মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে প্রিয়ঙ্কাই সরাবেন, এমনটাই মত দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের।
পদ্মশিবিরের দুই সাংসদ অর্জুন সিং এবং জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভবানীপুর কেন্দ্রের আটটি ওয়ার্ড পর্যবেক্ষণে রাখবেন একজন করে বিজেপি বিধায়ক। তাঁদেই মাথায় থাকবেন দুই সাংসদ।
একই সময়ে নির্বাচন ও ভোট গণনা হবে রাজ্যের আরো দুই আসন সমশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে। ভবানীপুর-সহ বাকি ৭টি বিধানসভা আসনে ভোট করানোর দাবিতে বার বার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি ছিল, রাজ্যো করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কম। তাই ভোট করানো যেতে পারে।
তৃণমূল মোট ২১৩ টি সিট পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিধানসভা নির্বাচনে। তারপরেও ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে প্রায় ছ’জন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন রাজ্যের শাসকদলে। সেই সংখ্যাটাও আরও বাড়তে পারে। এবার উপনির্বাচনে সেই আসন সংখ্যা আরও বাড়ানোর সুযোগ এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কাছে।