স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC corruption) মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক সরকারী আধিকারিকদের৷ প্রাক্তন বিচারপতি আর কে বাগ নেতৃত্বধীন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। আরও প্রভাবশালী নেতাদের নাম জড়িত রয়েছে বলে দাবি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, এসএসসি কেলেঙ্কারিতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে৷
শনিবার দিলীপ ঘোষ বলেন, যখনই সিবিআই ডাকে, ইডি ডাকে তখনই তৃণমূল নেতারা কোর্টে চলে যান অথবা হাসপাতালে চলে যান। তাঁর কথায়, যতগুলি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে সত্যি সত্যি সমস্ত কমিটির রিপোর্ট আসলে তাহলে অনেক রাঘব বোয়াল ধরা পড়বে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আর কে বাগ কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ নেই টাকার লেনদেনের কথা। কিন্তু মেদিনীপুরের সাংসদের কথায়, অনেকে চাকরি করছেন, যারা পরীক্ষায় বসেনি। এমনকি পাশ করতে পারেনি যারা তাঁদেরকেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। দশ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকা।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দকুমার মুখ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে গ্রুপ সি নিয়োগ দুনীর্তি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেন বাগ কমিটির আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আদালতকে জানান, ৩৮১ জনকে ভুয়ো নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেননি। বাকিরা পাশ করেনি। যে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে তার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের মে মাসে।
রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে ২০১৯ সালের মে মাসে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নিয়োগ হয়েছে নভেম্বর মাস অবধি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিনহার সুপারিশেই ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করেন পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।
অভিযোগ, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পেন্ডিং রিক্রুটমেন্ট শেষ করতে বলেন। তাঁর নির্দেশেই পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। নম্বর বাড়িয়ে ওএমআর শিটে গণ্ডগোল করা হয়েছে দাবি আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, সমরজিৎ আচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সৌমিত্র সরকার, অশোককুমার সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শর্মিলা মিত্র, শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শেখ সিরাজউদ্দিন, মহুয়া বিশ্বাস, রাজেশ লায়েক এবং ধ্রুব চক্রবর্তী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ দিয়েছে কমিটি। যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলা হয়নি।