উত্তরবঙ্গে একেবারে নড়বড়ে তৃণমূলের সংগঠন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোষ্ঠিকোন্দল কোচবিহারে৷ এবার প্রকাশ্যে বাকযুদ্ধে জড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় এবং কোচবিহার (Coochbehar) পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। দুই নেতার পারস্পরিক বাকযুদ্ধে বাড়ল রাজনৈতিক উত্তাপ৷
বৃহস্পতিবার এক সভা থেকে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “২০১৬ সালে একটা উপনির্বাচন হয়েছিল। এখনও আমি মনে করি সেই উপনির্বাচনে একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এমন একজনকে আমি বা আমরা প্রার্থী পদের জন্য সুপারিশ করেছিলাম যে একটা ভুলের মাশুল কোচবিহারের তৃণমূল কর্মী এবং কোচবিহারের সাধারণ মানুষকে দিতে হচ্ছে”।
তিনি আরও বলেন, “একটা গোখরো সাপকে বিশ্বাস করা যায়। তাকে নিয়ে বিছানায় ঘুমানো যায়। কিন্তু সেদিন যাকে সুপারিশ করেছিলাম। তাকে বিশ্বাস করা যায় না”। বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার বক্তব্যে রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের অন্দরে যে চিড় ধরেছিল, তা এখন ফাটলে পরিণত হয়েছে।
টিএমসি জেলা সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় নাম না করে বলেন, ” কেউ কেউ সভাপতির ডাকে মিছিলে না গিয়ে অন্য মিছিলে হাজির হচ্ছে। নিশ্চিত করে বলতে পারি আপনি দু’একটা লোক নিয়ে চামচাগিরি করে যাবেন, এটা হতে পারে না”।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে কোচবিহারে দায়িত্ব সামলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনিই ২০১৬ সালের উপনির্বাচনে পার্থ প্রতিম রায়কে প্রার্থী করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান। কিন্তু ২০১৯ সালে তা বদলে যায়। প্রার্থীপদে বদল করে পরেশ চন্দ্র বর্মনকে আনা হয়। কোচবিহার আসনে পরাজিত হয় তৃণমূল। সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। তারপরেও একাধিক সভাপতি বদল হয়। কিন্তু জেলায় গোষ্ঠিকোন্দল নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি কেউ।
সম্প্রতি নজরুল মঞ্চে কোচবিহারে জেলা সভাপতির দায়িত্বভার পার্থর ওপর তুলে দেওয়ার পর থেকেই জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব বাড়তে শুরু করে। কিছুদিন আগেই পার্থ প্রতিম রায়ের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন গিরিন্দ্রনাথ বর্মন। এবার সেই সুরে তাল মেলালেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।