রাজধানী দিল্লি থেকে ইন্দোরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন লাগায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। বিমানে মোট যাত্রী সংখ্যা ছিল প্রায় শতাধিক। ঘটনাটি ঘটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই, যখন বিমানের কার্গো অংশ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন এবং ক্যাবিন ক্রুরা সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতা অবলম্বন করেন।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, দিল্লি বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই যন্ত্রাংশে সমস্যার কারণে হঠাৎ ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। পাইলট তৎক্ষণাৎ কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জরুরি অবতরণের অনুমতি চান। দ্রুততার সঙ্গে বিমানটি দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করানো হয়। পাইলটের দক্ষতা এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের তৎপরতায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।
যাত্রীদের আতঙ্ক
ঘটনার সময় বিমানের ভিতরে উপস্থিত যাত্রীরা জানান, হঠাৎ ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। কেউ কেউ প্রার্থনা করতে থাকেন, আবার কেউ মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যদের খবর দিতে চেষ্টা করেন। এয়ার হোস্টেস এবং কেবিন ক্রুরা যাত্রীদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন এবং সেফটি নির্দেশিকা মেনে চলার আবেদন জানান। বিমানের ভিতরে অক্সিজেন মাস্ক প্রস্তুত রাখা হয়েছিল যাতে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা যায়।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিবৃতি
ঘটনার পর এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। সংস্থার তরফে সমস্ত যাত্রীকে বিকল্প ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে তারা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারেন। পাশাপাশি ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা
দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ফায়ার সার্ভিস এবং মেডিকেল টিমকে সক্রিয় করা হয়েছিল। রানওয়ের ধারে একাধিক ফায়ার টেন্ডার প্রস্তুত রাখা হয়। বিমান অবতরণের পর সব যাত্রীকে নিরাপদে বাইরে বের করে আনা হয়। সৌভাগ্যবশত, কেউ গুরুতর আহত হননি। কয়েকজন যাত্রী শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলেও প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা সুস্থ হয়ে ওঠেন।
আতঙ্কের রেশ
যদিও বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো গেছে, যাত্রীদের মধ্যে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। অনেক যাত্রী জানিয়েছেন, এই অভিজ্ঞতা তাদের জীবনে ভোলার নয়। আকাশপথে ভ্রমণের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। এ ধরনের ঘটনা যাত্রীদের মনে আতঙ্ক তৈরি করে, তাই এয়ারলাইন সংস্থাগুলিকে বিমানের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা পরীক্ষার ওপর আরও বেশি জোর দেওয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।