‘‘RSS হস্তক্ষেপ করে না’’— উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী নিয়ে জল্পনায় শাহের সাফাই

এনডিএ জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী নির্বাচনের প্রসঙ্গ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চলছিল নানা জল্পনা। বিশেষ করে বিজেপির(Amit Shah) প্রার্থী নির্বাচনে (Rashtriya Swayamsevak Sangh) (RSS)-এর প্রভাব নিয়ে…

RSS does not interfere' - Shah clarifies on speculation about Vice Presidential candidate

এনডিএ জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী নির্বাচনের প্রসঙ্গ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চলছিল নানা জল্পনা। বিশেষ করে বিজেপির(Amit Shah) প্রার্থী নির্বাচনে (Rashtriya Swayamsevak Sangh) (RSS)-এর প্রভাব নিয়ে বিরোধীদের তরফে উঠছিল নানা অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ।

একটি সাক্ষাৎকারে শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আরএসএস সরাসরি কোনও ভূমিকা নেয় না। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রীর আরএসএসের সঙ্গে যোগ রয়েছে, আমারও আরএসএসের সঙ্গে যোগ রয়েছে। দেশ কি আমাদের বেছে নিয়েছে শুধুমাত্র আমরা আরএসএস থেকে এসেছি বলে? আরএসএসের সঙ্গে সংযোগ থাকা কি কোনও নেতিবাচক দিক?”

   

আরএসএস নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ

বিগত কয়েকবছর ধরেই বিরোধী শিবির অভিযোগ করে আসছে, বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলিতে আরএসএস পরোক্ষভাবে প্রভাব খাটায়। বিশেষত রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতির মতো সাংবিধানিক পদে প্রার্থী নির্বাচনে সঙ্ঘের মতামত নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। বিরোধীদের মতে, এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ ঘটে।

কিন্তু অমিত শাহ (Amit Shah) সেই অভিযোগকে একেবারে খারিজ করে দিলেন। তিনি স্পষ্ট জানালেন, আরএসএস কোনও রাজনৈতিক দল নয়। তারা মতাদর্শগত সংগঠন হিসেবে কাজ করে, কিন্তু সাংবিধানিক পদে প্রার্থী নির্বাচনের মতো বিষয়ে সরাসরি ভূমিকা নেয় না।

শাহের বক্তব্যের তাৎপর্য

অমিত শাহর এই মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একদিকে তিনি স্বীকার করেছেন যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আবার অন্যদিকে তিনি এই সম্পর্ককে নেতিবাচক হিসেবে দেখার প্রবণতাকে আক্রমণ করেছেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আরএসএস একটি সাংগঠনিক শক্তি, যেখান থেকে বহু সমাজসেবী, কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতার উত্থান হয়েছে। তাহলে শুধুমাত্র আরএসএস থেকে আসা মানেই কি খারাপ কিছু? যদি তাই হয়, তবে জনগণ কেন আমাদের বারবার নির্বাচিত করছে?’’

বিরোধীদের পাল্টা সওয়াল

Advertisements

যদিও শাহের (Amit Shah) বক্তব্যের পরেও বিরোধীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। বিরোধী নেতারা দাবি করছেন, ‘‘আরএসএসকে শুধুমাত্র মতাদর্শগত সংগঠন বলা হলেও বাস্তবে বিজেপির প্রার্থী নির্বাচনে তাদের ভূমিকা স্পষ্ট। বিজেপি নেতারা যতই অস্বীকার করুন না কেন, প্রার্থী বাছাইয়ে সঙ্ঘের নির্দেশেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।’’

এই অভিযোগ যে এত সহজে মুছে যাবে না, তা বোঝাই যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া থেকে।

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের গুরুত্ব

ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোয় উপরাষ্ট্রপতি পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কেবলমাত্র সংসদের রাজ্যসভার চেয়ারম্যানই নন, রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে দেশের শীর্ষ সাংবিধানিক দায়িত্বও সামলান। তাই এই পদে প্রার্থী নির্বাচনের প্রশ্নে যে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হবে, তা স্বাভাবিক।

বিজেপি অবশ্য দাবি করছে, এনডিএ-র প্রার্থী নির্বাচনে দলের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াই মূল ভিত্তি। অমিত শাহর বক্তব্যে সেই অবস্থানই পরিষ্কার হয়েছে।

সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি

রাজনৈতিক তরজার বাইরে সাধারণ মানুষ অবশ্য ভিন্নভাবে দেখছেন এই প্রসঙ্গকে। অনেকের মতে, ‘‘যে সংগঠন থেকে কেউ উঠে আসুক না কেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, তিনি কতটা যোগ্য এবং দেশের জন্য কতটা কার্যকর হবেন। আরএসএস বা অন্য কোনও সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অপরাধ নয়।’’

অন্যদিকে অনেকে মনে করছেন, সাংবিধানিক পদগুলিকে কোনও মতাদর্শগত প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা উচিত। কারণ, এই পদগুলির মাধ্যমে গোটা দেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়।