তন্ত্র-মন্ত্রের ভয় দেখিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণ! বসিরহাটে গ্রেফতার ইয়াদ আলি

তন্ত্র, মন্ত্র কালা জাদু, সমাজের একটা বিশাল অংশে ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়েছে এই কুসংস্কার (Black Magic)। শুধু গ্রাম গঞ্জে নয় আজকাল তথাকথিত শহুরে মানসিকতার মানুষ…

Black Magic rape

তন্ত্র, মন্ত্র কালা জাদু, সমাজের একটা বিশাল অংশে ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়েছে এই কুসংস্কার (Black Magic)। শুধু গ্রাম গঞ্জে নয় আজকাল তথাকথিত শহুরে মানসিকতার মানুষ জন ও কথায় কথায় শরণাপন্ন হচ্ছে এই ধরণের কুসংস্কারের। আর কিছু সুযোগ সন্ধানী এই সুযোগে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা এবং এই তথাকথিত তন্ত্রের আড়ালে করে চলেছে পাপাচার।

ঠিক এরকম ই একটি ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে। বসিরহাটের স্বরূপনগর থানা এলাকার ৭০ বছর বয়েসি বাসিন্দা ইয়াদ আলী। এলাকার নাম করা গুনিন। দীর্ঘদিন ধরে ঝাড় ফুঁক তন্ত্র মন্ত্রের কাজ করে আসছে গ্রামের মধ্যে। গ্রামেরই ১২ বছরের এক নাবালিকার উপরে বহুদিন ধরেই কুনজর ছিল তার। প্রায় প্রত্যেক দিনই ইয়াদ আলী ঝাড় ফুঁক কালাজাদুর ভয় দেখাত ওই নাবালিকাকে।

   

গতকাল দুপুরে আবারও ওই নাবালিকাকে ভয় দেখতে শুরু করে ওই ৭০ বছরের গুনিন। তারপর বাড়িতে বাবা মা না থাকায় তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়িতে ফিরে মেয়েকে অসুস্থ দেখে সন্দেহ হয় ওই নাবালিকার অভিভাবকের। তারপর মেয়েটি নিজেই এই নক্কারজনক ঘটনার কথা জানায়। শনিবার সন্ধ্যায় ইয়াদ আলীর গাজীর বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই নাবালিকার পরিবার।

অভিযোগের ভিত্তিতে ইয়াদ আলী গাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে রবিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। পাশাপাশি ওই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরী করেছে। এলাকার প্রত্যেকেই এই ঘটনার নিন্দে করে বলেছেন অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত।

Advertisements

কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে দীর্ঘদিন ধরেই ওই অভিযুক্ত এই তন্ত্র মন্ত্রের মিথ্যে ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল। তবে এই ঝাড় ফুঁকের আড়ালে এর আগেও অভিযুক্তের এই ধরণের কোনো অভিযোগ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা স্বভাবতই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন তাই অভিযুক্তকে স্থানীয় রোষের হাত থেকে বাঁচাতে তড়িঘড়ি পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।

সমাজ মাধ্যমে এই ঘটনা প্রকাশের পরেই সরব হয়েছেন সমোলোচকরা। তাদের মতে এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এই ধরণের পাশবিক কাজকর্ম মেনে নেওয়া যায়না। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও কিভাবে মানুষ তন্ত্র মন্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে সেই বিষয় নিয়েও সরব হয়েছেন অনেকে।

সমালোচকদের একাংশের মতে আগে এত ছিলনা গত কয়েক বছরে এই সোশ্যাল মিডিয়াতেই তন্ত্র, মন্ত্র, কালাজাদু নিয়ে খুব বেশি চর্চা হচ্ছে। যার ফল স্বরূপ কিছু অসাধু ব্যাক্তি এই কুসংস্কারের আড়ালে পাপের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। তার সঙ্গে মেয়েদের সম্মান নিয়েও খেলা করছে, তাই এই ধরণের জিনিস সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা বন্ধ হোক।