নিউ ইয়র্ক: নিউ ইয়র্ক রাজ্যের পেমব্রোক এলাকার ইন্টারস্টেট ৯০ হাইওয়েতে নায়াগ্রা ফলস (Niagara Falls) থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ফেরার পথে একটি টুর বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। দুর্ঘটনায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিকও রয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ এবং সংবাদ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাসে মোট ৫৪ জন যাত্রী ছিলেন।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন শঙ্কর কুমার ঝা, ৬৫, বিহার, ভারত; পিঙ্কি চাংরানি, ৬০, ইস্ট ব্রান্সউইক, নিউ জার্সি; ঝি হংঝু, ২২, বেইজিং, চীন; ঝাং শিয়াওলান, ৫৫, জার্সি সিটি, নিউ জার্সি; এবং জিয়ান মিংলি, ৫৬, জার্সি সিটি, নিউ জার্সি। খবর অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনা স্থানীয় সময় দুপুর ১২.২২ মিনিটে ঘটেছে।
নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশের ট্রুপার জেমস ও’ক্যালাহান জানিয়েছেন, বাসটি পূর্বমুখী রাস্তায় চলছিল, তখন “বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা মেরিডিয়ানে ঢুকে যায়, অতিরিক্ত সংশোধন করা হয় এবং অবশেষে খাঁড়িতে লुढ়ে যায়।”
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় বাসটি উল্টে গিয়ে ইন্টারস্টেট ৯০ এর দক্ষিণ পাশে ড্রেনেজের মধ্যে পড়ে যায়। এতে প্রায় সবাই আহত হয়েছেন, এবং অনেক যাত্রী বাস থেকে ছিটকে পড়েছেন। বাসে যাত্রীদের বয়স ১ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে ছিল।
নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশ ট্রুপ টি কমান্ডার মেজর অ্যান্ড্রে রে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন, তবে হাসপাতালে অনেকেই চিকিৎসাধীন। তবে কোনো রোগী জীবন হুমকির মুখে নেই।
বাসটি স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের M&Y ট্যুর ইঙ্ক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, এক শিশু হতাহতদের মধ্যে রয়েছে, কিন্তু পরে তা ভ্রান্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে যে, বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি বা চালকের নেশা বা অক্ষমতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেনি। ট্রুপার ও’ক্যালাহান জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর প্রতিটি যাত্রী কম-বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বাসের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল, এবং দুর্ঘটনার সময় অনেক যাত্রী বাইরে ছিটকে পড়েছেন। তবে চালক “সুস্থ এবং নিরাপদে” আছেন।
নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হকুল X-এ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি “ট্রাজেডি মূলক টুর বাস দুর্ঘটনার” বিষয়ে অবহিত হয়েছেন এবং তাঁর অফিস “রাষ্ট্র পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে।”
নিউ ইয়র্কের এই দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যাত্রীদের মধ্যে ভারতীয়, চীনা ও ফিলিপিনো মূলের লোক ছিলেন। বিশেষ করে ভারতীয় নাগরিক শঙ্কর কুমার ঝা’র মৃত্যুর খবর দেশের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে।
পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে এবং সড়কের উভয় দিক বন্ধ ছিল। পূর্বমুখী লেন রাত ৮.৩০ টায় এবং পশ্চিমমুখী লেন বিকেল ৫ টার পর পুনরায় খুলেছে।
বাস দুর্ঘটনার কারণে পর্যটন ও সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পর্যটন বাস চালকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং রাস্তায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি।