গুজরাটের কচ্ছ জেলার ইন্দো-পাক সীমান্তবর্তী কোরি ক্রিক এলাকায় বিশেষ অভিযানে ১৫ জন পাকিস্তানি জেলেকে গ্রেফতার করল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF)। একই সঙ্গে একটি ইঞ্জিনচালিত দেশি নৌকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রোববার বিএসএফের তরফে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গোপন সূত্রে পাওয়া নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
বিএসএফ জানিয়েছে, শনিবার তাদের ৬৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের সীমান্ত পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় একটি অচিহ্নিত নৌকা দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। খবর পাওয়া মাত্রই কোরি ক্রিক অঞ্চলে বিস্তৃত তল্লাশি শুরু হয়। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ১৫ জন পাকিস্তানি জেলেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা উদ্ধার করা হয়েছে। বিএসএফ জানিয়েছে, জেলেরা সকলেই পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের সুজাওয়াল জেলার বাসিন্দা।
বাজেয়াপ্ত নৌকায় প্রায় ৬০ কেজি মাছ, ৯টি মাছ ধরার জাল, ডিজেল, বরফ, খাদ্যসামগ্রী এবং কাঠের লাঠি পাওয়া যায়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন এবং পাকিস্তানি মুদ্রায় ২০০ রুপি উদ্ধার হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় জেলেদের জেরা করা হচ্ছে এবং তারা কোনও গোপন তথ্য বহন করছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কোরি ক্রিক অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই কড়া নিরাপত্তার আওতায় রয়েছে। এই অঞ্চলটি অতি দুর্গম এবং বিস্তৃত জলাভূমি হওয়ায় প্রায়ই পাকিস্তানি জেলেরা অনধিকারপ্রবেশ করে ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করে বলে অভিযোগ। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়মিত টহল চালিয়ে এই ধরনের অনুপ্রবেশ রুখে চলেছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনাটি সীমান্ত নিরাপত্তার গুরুত্বকে আরও একবার সামনে এনেছে।
বিএসএফের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে খবর ছিল যে সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি সন্দেহজনক নৌকা দেখা গিয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা দ্রুত অভিযান শুরু করি। ফলস্বরূপ ১৫ জন পাকিস্তানি জেলে ধরা পড়েছে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি এবং বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলে প্রায়ই পাকিস্তানি জেলেদের আটক করা হয়। ভারতীয় আইন অনুযায়ী সীমান্ত লঙ্ঘন একটি গুরুতর অপরাধ। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এই জেলেরা জীবিকার তাগিদে সীমান্ত অতিক্রম করে মাছ ধরতে গিয়ে ধরা পড়ে। তারপরও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। নৌকা ও জেলেদের জেরা শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সাম্প্রতিক এই অভিযান ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতি বিএসএফের নজরদারির কড়াকড়ি আরও একবার প্রমাণ করল। একই সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিএসএফের তৎপরতাও স্পষ্ট করে তুলেছে।