হিমাচল প্রদেশে চলমান বর্ষণ (Himachal Pradesh Monsoon) মৌসুমে জনজীবন ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (SDMA)-এর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩১২টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় সড়ক NH-305, যা বিশেষভাবে কুল্লু জেলায় বহু স্থানে বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও, ৯৭টি বিদ্যুৎ বিতরণ ট্রান্সফর্মার (DTR) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৫১টি পানীয় জলের প্রকল্প ব্যাহত হয়েছে।
SDMA জানিয়েছে, ২০ জুন থেকে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু সংখ্যা ২৯৮ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বর্ষণ সম্পর্কিত দুর্ঘটনা যেমন ভুমিধস, বজ্রপাত, প্লাবন এবং বাড়ি ধসের কারণে। ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। বাকী মৃত্যুর কারণ মূলত বর্ষা মৌসুমের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য ঘটনায়।
কুল্লু জেলা সর্বাধিক রাস্তা বন্ধের মুখোমুখি হয়েছে। এখানে মোট ১০১টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে NH-305-এর বালিচৌকি, গাজাডাহার এবং ফেরেদানাল্লাহ অংশ উল্লেখযোগ্য। মণ্ডি জেলায় ১৬০টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে, এবং কঙ্গ্রায় ২১টি রাস্তা বন্ধ। অন্যান্য প্রভাবিত জেলা হলো কिन्नৌর (২), চাম্বা (২), লাহৌল ও স্পীতি (১), শিমলা (৬), সিরমৌর (৬) এবং উনা (১১)।
বিদ্যুৎ সরবরাহও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। মণ্ডি জেলায় ৭০টি DTR ব্যাহত হয়েছে। কুল্লুতে ১৭টি, কঙ্গ্রায় ৬টি, লাহৌল ও স্পীতিতে ১টি এবং হামিরপুরে ৫টি DTR সমস্যায় পড়েছে। পানীয় জলের ক্ষেত্রে মণ্ডিতে ৩৬টি প্রকল্প ব্যাহত হয়েছে, লাহৌল ও স্পীতিতে ২টি, কঙ্গ্রায় ৮টি এবং কুল্লুতে কোনো প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ভারী বর্ষণের কারণে ভুমিধস এবং হঠাৎ প্লাবনের ঝুঁকি এখনো রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) আগামী ৭২ ঘন্টার জন্য ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করেছে। SDMA জনসাধারণকে অনুরোধ করেছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে।
প্রতিবছর এই সময়ে হিমাচল প্রদেশের উচ্চভূমি অঞ্চলগুলো বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ হয়। বর্ষার সময় পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে সড়ক ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি নিয়মিত ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর চেষ্টা করছে।
সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে যে, পাহাড়ি এলাকায় চলাচল করা বিপজ্জনক। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা যত দ্রুত সম্ভব পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রশাসন কাজ করছে। এছাড়াও, জনসাধারণকে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বর্ষা মৌসুমের এই পরিস্থিতি হিমাচল প্রদেশের জনজীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, সড়ক বন্ধ, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সমস্যা এবং নিরাপত্তার জন্য বাড়ছে সতর্কতার প্রয়োজন। আগামী কয়েক দিনে ভারী বর্ষণ চলার কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে, যা স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।