প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেলের পুত্র চৈতন্য বাঘেলকে মদ কেলেঙ্কারি মামলায় ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের ছেলে চৈতন্য বাঘেলকে বহুল আলোচিত মদ কেলেঙ্কারি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে রায়পুর আদালত। প্রাথমিকভাবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) তাকে ৫ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর আদালত তাকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
চৈতন্য বাঘেলকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে?
২০২৫ সালের ১৮ জুলাই, চৈতন্য বাঘেলকে অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলায় গ্রেপ্তার করে ED, অভিযোগ, রাজ্যের মদ ব্যবসায় জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ₹২,১৬১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ED দাবি করছে, এই কেলেঙ্কারির অন্যতম মূলচক্রী চৈতন্য বাঘেল।
এই কেলেঙ্কারির মূল কেন্দ্রে ছিল ছত্তিশগড় স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশন লিমিটেড (CSMCL)। অভিযোগ অনুযায়ী, মদের উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হতো। সরকারি দোকান থেকে বেআইনিভাবে দেশি মদ বিক্রি করা হতো এবং বিদেশি মদের লাইসেন্স (FL-10A) বদলে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হতো নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
এই মামলায় আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি জড়িত, যেমন ব্যবসায়ী অনোয়ার ধেবার, প্রাক্তন আমলা অনিল তুতেজা, এবং প্রাক্তন মদ ও আবগারি মন্ত্রী কাওয়াসি লাখমা যারা নিয়মিত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এখন পর্যন্ত, ED প্রায় ₹২০৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
২০২৫ সালের ৪ আগস্ট, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে ভূপেশ বাঘেল ও তার পুত্র চৈতন্য বাঘেল যেন তদন্ত ও সম্ভাব্য গ্রেপ্তার সংক্রান্ত বিষয়ে ছত্তিশগড় হাইকোর্টে যান।
শীর্ষ আদালত আরও জানায়, তারা চাইলে প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA)-এর কিছু ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নতুন মামলা করতে পারেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
কংগ্রেস কড়া ভাষায় সমালোচনা করে বলেছে, এটি নির্বাচনের আগে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রকাশ। তাদের অভিযোগ, বিরোধী নেতাদের দমন করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই মামলার তদন্ত আরও গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছত্তিশগড়ের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে সামনে রাজ্য নির্বাচন থাকায়।