সপ্তাহান্তে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কোন শহরে কত? জানুন বিস্তারিত

ভারতের জ্বালানি খাতে পেট্রোল (Petrol Prices) ও ডিজেলের দাম সবসময়ই সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পরিবহন, কৃষি, শিল্প থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম…

Petrol diesel price India today

ভারতের জ্বালানি খাতে পেট্রোল (Petrol Prices) ও ডিজেলের দাম সবসময়ই সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পরিবহন, কৃষি, শিল্প থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম – সব ক্ষেত্রেই এর সরাসরি প্রভাব পড়ে। তাই প্রতিদিন সকাল ৬টায় তেল বিপণন সংস্থাগুলি (OMCs) নতুন দাম প্রকাশ করে থাকে। এর ফলে ভোক্তারা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠাপড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানির হালনাগাদ দাম জানতে পারেন।

আজকের (২৩ আগস্ট) শহরভিত্তিক পেট্রোল ও ডিজেলের দাম:
নয়াদিল্লি: পেট্রোল ৯৪ টাকা ৭২ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮৭ টাকা ৬২ পয়সা প্রতি লিটার।
মুম্বাই: পেট্রোল ১০৪ টাকা ২১ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯২ টাকা ১৫ পয়সা প্রতি লিটার।
কলকাতা: পেট্রোল ১০৩ টাকা ৯৪ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯০ টাকা ৭৬ পয়সা প্রতি লিটার।
চেন্নাই: পেট্রোল ১০০ টাকা ৭৫ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯২ টাকা ৩৪ পয়সা প্রতি লিটার।
আহমেদাবাদ: পেট্রোল ৯৪ টাকা ৪৯ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯০ টাকা ১৭ পয়সা প্রতি লিটার।
বেঙ্গালুরু: পেট্রোল ১০২ টাকা ৯২ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮৯ টাকা ০২ পয়সা প্রতি লিটার।
হায়দরাবাদ: পেট্রোল ১০৭ টাকা ৪৬ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯৫ টাকা ৭০ পয়সা প্রতি লিটার।
জয়পুর: পেট্রোল ১০৪ টাকা ৭২ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯০ টাকা ২১ পয়সা প্রতি লিটার।
লখনউ: পেট্রোল ৯৪ টাকা ৬৯ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮৭ টাকা ৮০ পয়সা প্রতি লিটার।
পুনে: পেট্রোল ১০৪ টাকা ০৪ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯০ টাকা ৫৭ পয়সা প্রতি লিটার।
চণ্ডীগড়: পেট্রোল ৯৪ টাকা ৩০ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮২ টাকা ৪৫ পয়সা প্রতি লিটার।
ইন্দোর: পেট্রোল ১০৬ টাকা ৪৮ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯১ টাকা ৮৮ পয়সা প্রতি লিটার।
পাটনা: পেট্রোল ১০৫ টাকা ৫৮ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৯৩ টাকা ৮০ পয়সা প্রতি লিটার।
সুরাট: পেট্রোল ৯৫ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮৯ টাকা প্রতি লিটার।
নাসিক: পেট্রোল ৯৫ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি লিটার, ডিজেল ৮৯ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি লিটার।

   

তালিকা থেকে স্পষ্ট, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জ্বালানির দাম এক নয়। কর কাঠামো, পরিবহন খরচ ও স্থানীয় নীতিগত কারণে শহরভেদে দাম পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের (crude oil) দাম এবং ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারের উপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন এই দুইয়ের ওঠাপড়া সরাসরি প্রভাব ফেলে জ্বালানির মূল্যে। যদিও ২০২২ সালের মে মাস থেকে কর হ্রাসের কারণে দাম স্থিতিশীল রয়েছে, তবুও তেল বিপণন সংস্থাগুলি প্রতিদিন দাম আপডেট করতে থাকে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।

জ্বালানির দামে প্রভাব ফেলে যেসব বিষয়:
1. অপরিশোধিত তেলের দাম (Crude Oil Prices):
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে ওঠাপড়া হলে ভারতে সরাসরি তার প্রভাব পড়ে। কারণ ভারত তার চাহিদার ৮০% এর বেশি তেল আমদানি করে।

2. ডলারের বিপরীতে টাকার মান (Exchange Rate):
তেল আমদানি ডলারে হয়। তাই টাকার মান যদি দুর্বল হয়, তবে আমদানির খরচ বেড়ে যায় এবং তার প্রভাব পড়ে খুচরা দামে।

3. কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর (Taxes):
পেট্রোল ও ডিজেলের দামের বড় অংশই বিভিন্ন ধরনের কর। একেক রাজ্যে করের হার ভিন্ন হওয়ায় দামেও পার্থক্য দেখা যায়। যেমন চণ্ডীগড়ে ডিজেল সবচেয়ে কম ৮২.৪৫ টাকা, অথচ হায়দরাবাদে সেটি ৯৫.৭০ টাকা।

Advertisements

4. শোধনাগার খরচ (Refining Costs):
অপরিশোধিত তেল থেকে ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি তৈরি করতে শোধনাগারে যে খরচ হয়, সেটিও খুচরা দামে যুক্ত হয়।

5. চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য (Demand-Supply Dynamics):
যখন দেশে তেলের চাহিদা বাড়ে, তখন সরবরাহ চাপের মুখে পড়ে এবং দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট ছাড়াও গ্রাহকরা সহজেই এসএমএসের মাধ্যমে দৈনিক জ্বালানির দাম জানতে পারেন।
ইন্ডিয়ান অয়েল (IOC) গ্রাহকরা: শহরের কোড লিখে “RSP” লিখে পাঠাতে হবে 9224992249 নম্বরে।
বিপিসিএল (BPCL) গ্রাহকরা: “RSP” লিখে পাঠাতে হবে 9223112222 নম্বরে।
এইচপিসিএল (HPCL) গ্রাহকরা: “HP Price” লিখে পাঠাতে হবে 9222201122 নম্বরে।

এর ফলে ভোক্তারা তাদের শহরের সর্বশেষ জ্বালানির দাম কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই জানতে পারবেন।

জ্বালানির দাম শুধু গাড়িচালক বা পরিবহন খাতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদরেও প্রভাব ফেলে। ডিজেলের দাম বেড়ে গেলে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যায়, আর সেই বাড়তি খরচ শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হয়। অপরদিকে, দাম কমলে বাজারে স্বস্তি আসে।

ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দামের সঙ্গে জড়িত একাধিক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ কারণ। প্রতিদিনের এই দামের পরিবর্তন ভোক্তাদের স্বচ্ছ তথ্য প্রদান করে এবং বাজারে ন্যায্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কর কাঠামোতে বৈষম্য থাকায় শহরভেদে পার্থক্য অব্যাহত থাকবে।
তাই ভোক্তাদের উচিত নিয়মিত জ্বালানির দাম নজরে রাখা, বিশেষত যারা প্রতিদিন দীর্ঘ দূরত্বে গাড়ি চালান বা ব্যবসায়িক কারণে জ্বালানির উপর নির্ভরশীল। এসএমএস বা অনলাইনের মাধ্যমে দাম জেনে নেওয়া এখন আর কঠিন নয়, বরং কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই জানা সম্ভব।