খরিফ মরশুমে আরও সস্তা সার! জানাল কেন্দ্র

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে, চলমান খরিফ মরশুমে দেশের সমস্ত রাজ্যে সারের প্রাপ্যতা সন্তোষজনক রয়েছে (Kharif Season)। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,…

Kharif Season

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে, চলমান খরিফ মরশুমে দেশের সমস্ত রাজ্যে সারের প্রাপ্যতা সন্তোষজনক রয়েছে (Kharif Season)। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরিয়া, ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট), এনপিকেএস (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ ও সালফার) এবং অন্যান্য সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, যা কৃষকদের চাহিদা পূরণে সক্ষম।

এই মরশুমে সারের সরবরাহ নিয়ে কোনো ঘাটতি বা সংকটের খবর নেই বলে সরকার জানিয়েছে। এই ঘোষণা কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বস্তি এনেছে, যারা খরিফ ফসলের জন্য সারের উপর নির্ভরশীল।সারের প্রাপ্যতা ও বিতরণকৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি খরিফ মরশুমে (জুন থেকে অক্টোবর) সারের মোট চাহিদা প্রায় ৩৫০ লক্ষ মেট্রিক টন।

   

এর মধ্যে ইউরিয়ার চাহিদা প্রায় ১৮০ লক্ষ মেট্রিক টন, ডিএপি-এর ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন এবং এনপিকেএস-এর ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন। সরকার জানিয়েছে, এই চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।

পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানার মতো কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলিতে সারের সরবরাহ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সার সরবরাহের জন্য রেলওয়ে এবং সড়ক পরিবহনের সমন্বিত ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনে সার বিতরণ ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করা হয়েছে। কৃষকরা ‘কৃষি উৎকর্ষ’ পোর্টাল এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সারের প্রাপ্যতা ও বিতরণ কেন্দ্র সম্পর্কে রিয়েল-টাইম তথ্য পেতে পারেন।

কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, “খরিফ মরশুমে সারের ঘাটতি রোধে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিশ্চিত করেছি যে, প্রতিটি কৃষক তাঁর প্রয়োজনীয় সার সময়মতো পান।” তিনি জানান, সার উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় সভা করা হচ্ছে এবং আমদানি-নির্ভর সার যেমন ডিএপি এবং পটাশের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করা হয়েছে।

সরকার জানিয়েছে, চলতি মরশুমে ইউরিয়ার উৎপাদন ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের অধীনে নতুন সার কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া, ন্যানো-ইউরিয়া এবং জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যা পরিবেশবান্ধব এবং কৃষকদের জন্য সাশ্রয়ী।

Advertisements

পশ্চিমবঙ্গে খরিফ মরশুমে ধান, পাট এবং শাকসবজির মতো ফসলের উপর নির্ভরশীল কৃষকদের জন্য সারের প্রাপ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ইউরিয়া, ডিএপি এবং এনপিকেএস-এর পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। রাজ্যের কৃষি দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ১০ লক্ষ মেট্রিক টন সারের মজুত রয়েছে, এবং প্রতিটি জেলায় বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকরা সহজেই সার পাচ্ছেন।”

এছাড়া, রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য ভর্তুকিযুক্ত সার সরবরাহ নিশ্চিত করছে।চ্যালেঞ্জ ও সমাধানযদিও সরকার সারের প্রাপ্যতা নিয়ে আশাবাদী, তবুও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, কিছু দূরবর্তী এলাকায় সার বিতরণে বিলম্ব এবং কালোবাজারির সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে সরকার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কঠোর নজরদারি ব্যবস্থা চালু করেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কালোবাজারি রোধে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং অভিযোগের জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াবিরোধী দলগুলি সরকারের এই দাবির সমালোচনা করেছে।

আমেরিকার চাপ বাড়িয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির ঘোষণা ফ্রান্সের

প্রাপ্যতার কথা বললেও, সাশ্রয়ী মূল্যে সার পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।” তিনি দাবি করেন, সরকারের ভর্তুকি কমানোর নীতি কৃষকদের ক্ষতি করছে। এদিকে, বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের জন্য সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। বিরোধীরা শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে সমালোচনা করছে।”