দেশের শীর্ষস্থানীয় ফুটবল লিগ ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে। চলতি মরসুমে আদৌ আইএসএল হবে কি? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও নিশ্চিতভাবে মেলেনি। তবে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে হওয়া শুনানিতে এক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের দুই বিচারপতি পিএস নরসিমা ও জয়মাল্য বাগচি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আইএসএলের আয়োজক এফএসডিএল এবং সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করুক।
আদালতের নির্দেশ, আগামী ২৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানিতে ফেডারেশন এবং এফএসডিএলকে জানাতে হবে যে এই মরসুমে আইএসএল আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না। এই সময়সীমা মাত্র পাঁচ দিনের, যা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় আইএসএল আয়োজক সংস্থা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের কড়া অবস্থান স্পষ্ট, ফুটবল ফেডারেশন এবং লিগের আয়োজক সংস্থা আলোচনায় বসেই এই জটিলতার অবসান ঘটাবে। ফলে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের নজর এখন ২৮ আগস্টে।
এই সংকটের শুরু তখনই, যখন আইএসএলের ১১টি ক্লাব সম্মিলিতভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বর্ষীয়ান আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণের মাধ্যমে তাঁরা আবেদন করেন, যাতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের অচলাবস্থা দ্রুত কাটানো যায়। আদালতের নজরে আসে, আইএসএল এবং ফেডারেশনের মধ্যে ‘মাস্টার্স রাইটস এগ্রিমেন্ট’ নবীকরণ সংক্রান্ত জটিলতা, সংবিধান সংশোধন এবং ক্রীড়া আইনের কিছু ধারা।
বিচারপতি নরসিমা ও বিচারপতি বাগচি স্পষ্ট জানান, ক্রীড়া সংক্রান্ত প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ‘ন্যাশনাল স্পোর্টস বিল’কেও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। সেই রূপরেখা অনুযায়ী এআইএফএফের খসড়া সংবিধান চূড়ান্ত করার দিকেও নজর দিচ্ছে আদালত।
এই অনিশ্চয়তা শুধু কোর্ট রুমে সীমাবদ্ধ নেই। ইতিমধ্যে ওডিশা এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি এবং চেন্নাইয়িন এফসি মতো বড় ক্লাবগুলি ফুটবলার এবং কর্মচারীদের বেতন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চেন্নাইয়িন এফসি, যারা দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। তারাও জানিয়ে দিয়েছে, স্পষ্ট দিশা না পাওয়া পর্যন্ত তারা সম্পূর্ণ টিম প্রস্তুতি শুরু করবে না।
ফেডারেশন এবং এফএসডিএলের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ভিত্তি, ‘মাস্টার্স রাইটস এগ্রিমেন্ট’ (এমআরএ), যা টুর্নামেন্টের আয়োজক সংস্থার অধিকার নির্ধারণ করে, সেই চুক্তির নবীকরণ নিয়েই মূল দ্বন্দ্ব। আইএসএলের ক্লাবগুলির দাবি, এফএসডিএল যেন স্বচ্ছতা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে, এফএসডিএল চাইছে স্থায়ী কাঠামো এবং আর্থিক নিশ্চয়তা।
শুক্রবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই পক্ষকে একত্রে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেছে। এর ফলে আশার আলো দেখছে ক্লাবগুলি। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এই নির্দেশের জেরে হয়ত শিগগিরই শুরু হবে চুক্তি নবীকরণের আনুষ্ঠানিক আলোচনা