আজ কলকাতায় সম্প্রসারিত মেট্রো লাইনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Kona Expressway)। সবুজ পতাকা নেড়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য, শান্তনু ঠাকুর এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
নয়া মেট্রো পথের উদ্বোধনের পরেই যশোর রোড মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী৷ দমদমের সেন্ট্রাল জেলের ময়দানে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী বলেন।
তার পরবর্তী প্রকল্প “কোনা এক্সপ্রেসওয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য একটি চাবিকাঠি হয়ে উঠবে।” এই এক্সপ্রেসওয়ে কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং রাজ্যের শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। ৭.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে, যা হাওড়ার কোনা থেকে কলকাতার ভি.আই.পি রোড পর্যন্ত বিস্তৃত, প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পকে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এই এক্সপ্রেসওয়ে কলকাতার যানজট সমস্যা কমাতে এবং দ্রুত পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে গতিশীল করবে।কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে একটি দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য সড়ক সংযোগ স্থাপন করবে।
এটি হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন, কলকাতা বন্দর এবং শহরের ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলির মধ্যে যাতায়াতের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই এক্সপ্রেসওয়ে শুধু একটি রাস্তা নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির একটি প্রতীক। এটি কলকাতা ও হাওড়ার বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
এই প্রকল্পে ছয়টি লেন, আধুনিক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং পরিবেশবান্ধব ডিজাইন রয়েছে, যা যানজট ও দূষণ কমাতে সহায়ক হবে।এক্সপ্রেসওয়েটি হাওড়ার শিল্পাঞ্চল এবং কলকাতার আইটি হাব ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। এটি পণ্য ও পরিষেবার দ্রুত পরিবহন নিশ্চিত করবে, যা রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বিশেষভাবে উপকারী হবে।
এছাড়া, এই এক্সপ্রেসওয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উড়িষ্যার মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক সংযোগ জোরদার করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কলকাতা ভারতের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক রাজধানীগুলির মধ্যে একটি। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এই শহরের সম্ভাবনাকে আরও উন্মোচন করবে।”
তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়নের গতি ধীর হয়েছে। তৃণমূল সরকারের অদক্ষতার কারণে অনেক প্রকল্প বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গে আরও পরিকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে, যার মধ্যে মেট্রো রেল সম্প্রসারণ এবং জাতীয় সড়ক উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত।
মোদী বলেন হাওড়ার শিল্পাঞ্চল এবং কলকাতার আইটি হাবের মধ্যে দ্রুত সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এটি নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে যানজট কমার আশা করছেন, যা তাদের দৈনন্দিন যাতায়াতকে সহজ করবে।
Hero Xtreme 125R পাচ্ছে ক্রুজ কন্ট্রোল, মিলবে নতুন প্রিমিয়াম ফিচার
এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ এবং পুনর্বাসন নিয়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই সমস্যাগুলি সমাধান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে অন্যান্য জাতীয় সড়ক এবং মেট্রো রেলের সংযোগ আরও উন্নত করা হবে, যা কলকাতাকে একটি আধুনিক পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে।