মাসিক ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নদের

পটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল (Medical College)-এর এমবিবিএস ইন্টার্নরা তাদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন, যার ফলে হাসপাতালের আউট-পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) পরিষেবা ব্যাহত…

Medical College

পটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল (Medical College)-এর এমবিবিএস ইন্টার্নরা তাদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন, যার ফলে হাসপাতালের আউট-পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ওপিডি) পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (জেডিএ)-এর নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জন ইন্টার্ন শুক্রবার কালো ব্যাজ পরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন।

তারা তাদের বর্তমান মাসিক ভাতা প্রায় ২০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০,০০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। ইন্টার্নরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালে শেষবার ভাতা সংশোধন করা হয়েছিল, এবং সরকার তিন বছর পর এটি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

   

তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়, তবে মঙ্গলবার থেকে বিহারের সমস্ত মেডিকেল কলেজে ওপিডি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে। জেডিএ-এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের বর্তমান ভাতা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। আমরা দিনে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় রোগীদের সেবায় কাটাই, কিন্তু আমাদের প্রাপ্ত ভাতা একজন অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির সমান।”

তারা উল্লেখ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ইন্টার্নরা মাসিক ৪৩,০০০ টাকা এবং ওড়িশায় ৪০,০০০ টাকা ভাতা পান। এমনকি বিহারের মধ্যেই ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (আইজিআইএমএস)-এ ইন্টার্নরা প্রায় ৩০,০০০ টাকা এবং অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস), পটনায় ৩২,০০০ টাকা পান।

তবে, বিহারের ১০টি সরকারি মেডিকেল কলেজের প্রায় ১,২৭০ জন ইন্টার্ন মাত্র ১৯,৬০০ টাকা ভাতা পান। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তারা শুক্রবার কালো ব্যাজ পরে কাজ করেছেন। বিক্ষোভের কারণে পিএমসিএইচ-এর ওপিডি পরিষেবা আংশিকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

অনেক রোগী, বিশেষ করে দূরবর্তী গ্রামীণ এলাকা থেকে আগতরা, চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেছেন। জেডিএ-এর একজন প্রতিনিধি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি তুলে ধরছি, কিন্তু সরকার যদি আমাদের কথা না শোনে, তবে আমরা ওপিডি পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে বাধ্য হব।” তবে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং অস্ত্রোপচার পরিষেবাগুলি স্বাভাবিকভাবে চলছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

Advertisements

পিএমসিএইচ-এর প্রিন্সিপাল ড. বিদ্যাপতি চৌধুরী বলেন, “ইন্টার্নদের বিক্ষোভের কারণে ওপিডি পরিষেবা আংশিকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি এবং তাদের দাবি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে।” তিনি ইন্টার্নদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যায় এবং হাসপাতালের কার্যক্রম ব্যাহত করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

বিহার স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইন্টার্নদের দাবি বিবেচনার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে, তবে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।ইন্টার্নদের যুক্তিইন্টার্নরা জানিয়েছেন, তাদের কাজের তীব্রতা এবং দায়িত্বের তুলনায় ভাতা অপ্রতুল। একজন ইন্টার্ন বলেন, “আমরা প্রতিদিন শত শত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা, রক্ত পরীক্ষা, এবং ফলো-আপের কাজ করি।

কোভিড মহামারীর সময়ও আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। তবুও আমাদের ভাতা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম।” তারা আরও দাবি করেছেন, জাতীয় চিকিৎসা কমিশন (এনএমসি) নির্দেশিকা অনুযায়ী, ইন্টার্নদের ভাতা নিয়মিত সংশোধন করা উচিত।রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াবিরোধী দল আরজেডি এই ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করেছে।

পরীক্ষার্থীর সুরক্ষায় কড়া বিধি, SSC পরীক্ষার আগে নবান্নের নির্দেশ

আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “বিহারের ইন্টার্ন ডাক্তাররা ন্যায্য ভাতার জন্য লড়ছেন। সরকারের উচিত তাদের দাবি দ্রুত পূরণ করা।” তিনি অভিযোগ করেছেন, বিহার সরকার স্বাস্থ্য অবকাঠামো এবং চিকিৎসকদের সুবিধার বিষয়ে উদাসীন।পিএমসিএইচ-এর এমবিবিএস ইন্টার্নদের বিক্ষোভ বিহারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাকে তুলে ধরেছে।