দিল্লির গান্ধীনগরে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার (CM Rekha Gupta) জনসংযোগ সভায় হঠাৎই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, সভার মধ্যে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেছিলেন দুই ব্যবসায়ী। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও সরাসরি স্লোগান তুলতে শুরু করেন তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যেই পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা এগিয়ে গিয়ে দুই অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার উপর সম্প্রতি হামলার চেষ্টা হয়েছিল। ২০ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর আবাসে জনশুনানি চলাকালীন ওই হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, হামলাকারীর হাতে কিছু নথিপত্র ছিল, এবং সেই সময় আচমকাই মুখ্যমন্ত্রীর দিকে ধেয়ে যায় সে। ঘটনাস্থলেই অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশ। বর্তমানে সে সিভিল লাইন্স থানার হেফাজতে রয়েছে এবং তাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, ওই ব্যক্তি একাই এই পরিকল্পনা করেছিল নাকি এর পিছনে আরও কেউ জড়িত রয়েছে।
এই ঘটনার পর আজই প্রথমবার জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে গান্ধীনগরে আয়োজিত হয়েছিল ওই সভা। কিন্তু সভার মাঝেই ফের গোলমাল শুরু হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। জনসমাগমে নিরাপত্তার খামতি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিজেপি এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করে জানিয়েছে—যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তার সঙ্কটে ভুগছেন, সেখানে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মহিলারা কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন? একই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেসও। তাদের বক্তব্য, দিল্লির মতো মহানগরে মুখ্যমন্ত্রীর উপর বারবার হামলার চেষ্টা হওয়া প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রমাণ।
এদিকে, দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, আটক করা দুই ব্যবসায়ীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর উপর বারবার হামলার চেষ্টা ও জনসভায় গোলমালের মতো ঘটনাগুলি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে দিল্লিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে শুধু প্রশাসনিক দিক থেকেই নয়, সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ। আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে বলে সূত্রের খবর।
সব মিলিয়ে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার জনসংযোগ কর্মসূচি ঘিরে ফের উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় শহরজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। সাধারণ মানুষও স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন—যদি মুখ্যমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না যায়, তবে দিল্লিবাসীর নিরাপত্তা কার হাতে?