ভরসা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! জয়েন্টের মেধাতালিকার সেরা দশে নেই কোনও ‘কন্যাশ্রী’

রাজ্যে প্রকাশিত হল জয়েন্টের মেধা তালিকা (Laxmi Bhandar)। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মেধা তালিকার প্রথম দশে নাম নেই মেয়েদের। ঝাড়গ্রামের একটি জনসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়…

'lokkhi bhandar

রাজ্যে প্রকাশিত হল জয়েন্টের মেধা তালিকা (Laxmi Bhandar)। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মেধা তালিকার প্রথম দশে নাম নেই মেয়েদের। ঝাড়গ্রামের একটি জনসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প বাংলার মেয়েদের কেরিয়ারে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সেদিনের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলার বোনেরা।

কিন্তু জয়েন্টের ফল প্রকাশিত হতেই দেখা গেল সেখানে নাম নেই কোনো মেয়ের। মমতা সেদিন আরও বলেন যে কন্যাশ্রীতে বাংলার মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় অনেক এগিয়ে। তারা শুধু ভারতে নয় পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের মাটিতেও। তিনি বলেছিলেন নাসাতেও এমন বাংলার মেয়েরা কাজ করে যারা কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার তৈরী করেছে। তবে আজকের জয়েন্টের ফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সমলোকরা।

   

অনেকে বলেছেন মমতা যতই কন্যাশ্রী প্রকল্পের গুনগান করুন। জেলার প্রত্যন্ত জায়গার মেয়েদের ভরসা শুধু লক্ষীর ভান্ডার। আবার অনেকে বলেছেন মেয়েরা মেধা তালিকাতে পিছিয়ে পড়ার কারণ বাংলার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা।

যার মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তাই মহিলারা শুধু মাত্র লক্ষীর ভান্ডারের উপরেই ভরসা করতে বাধ্য হচ্ছে। আবার সমালোচক মহলের একাংশের মতে সরকারের দুর্নীতি এবং ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে চলা দীর্ঘ টানাপোড়েন এর কারণ হতে পারে।

হতে পারে তড়িঘড়ি এই ফল প্রকাশে কোনো কোনো খামতি থাকার ফলে এই ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। ওবিসি মামলা নিয়ে দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর আজ হঠাৎ ই প্রকাশিত হল জয়েন্টের ফল। ওবিসি মামলায় ২০২৪ সালে কলকাতা হাইকোর্ট ২০১০ সালের পরে জারি করা প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেয়। আদালতের মতে, এই শংসাপত্রগুলি বৈধ নিয়ম মেনে ইস্যু করা হয়নি। তাই এই মামলার দরুন জয়েন্টের ফল প্রকাশ করা যাচ্ছিল না।

আদালত বলেছিল নতুন তালিকা তৈরির জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ অনুযায়ী সমীক্ষা ও বিধানসভার অনুমোদন প্রয়োজন। এই রায়ের ফলে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এবং কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে।

Advertisements

যদিও শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আগেই। তার জন্যই সমস্ত বাধা বিপত্তি কাটিয়ে আজ, ২২ আগস্ট ২০২৫, পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড (WBJEEB) ফলাফল প্রকাশ করেছে। এই ফলাফলের মাধ্যমে প্রায় ৩৭,০০০ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১১,১৭৮ মেডিকেল আসনে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ফল প্রকাশে দেরিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও কম হয়নি। রাম থেকে বাম সবাই দফায় দফায় সরব হয়েছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। অনেকে মনে করছেন এই তাড়াহুড়ো এবং প্রায় গোজামিল দিয়ে হঠাৎ করেই আজ আচমকা জয়েন্টের মেধা তালিকা প্রকাশে থাকতে পারে ভ্রান্তি। তার কারণ প্রত্যেক বছরেই এক থেকে দশের মধ্যে এক দুজন মেয়ের নাম থাকেই এমনটাও বলছেন সমোলোচকরা।

শুল্ক জুজু! ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকাকে বার্তা চিনের

তবে কারণ যাই হোক বেশিরভাগ মানুষ ই তাদের মতামত দিয়েছেন এই বলে যে মমতা বন্দোপাধ্যায় যতই মেয়েদের উন্নয়নের কথা বলুন। মেয়েদের নিরাপত্তা শেষ করে দিয়ে শেষ পাতে মেয়েদের জন্য পড়ে রয়েছে শুধুই লক্ষীর ভান্ডার।