৬ বছরের ছেলেকে খুন করে ভারতে এসে গ্রেফতার মার্কিন মহিলা

আমেরিকার ‘টেন মোস্ট ওয়ান্টেড ফিউজিটিভ’ তালিকায় থাকা এক মহিলাকে ভারতে গ্রেফতার করা হয়েছে (US Woman)। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ছয় বছর বয়সী ছেলেকে হত্যা…

US Woman arrrested from India

আমেরিকার ‘টেন মোস্ট ওয়ান্টেড ফিউজিটিভ’ তালিকায় থাকা এক মহিলাকে ভারতে গ্রেফতার করা হয়েছে (US Woman)। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ছয় বছর বয়সী ছেলেকে হত্যা করে প্রসিকিউশন এড়াতে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন। এই মহিলা, সিন্ডি রদ্রিগেজ সিং (৪০), মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর হাতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং ইন্টারপোলের সহযোগিতায় গ্রেফতার হয়েছেন।

এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, এই গ্রেফতারি গত সাত মাসে তাদের ‘টপ টেন মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার চতুর্থ সাফল্য। তিনি টেক্সাসের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মার্কিন বিচার বিভাগ এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

   

সিন্ডি রদ্রিগেজ সিং-এর বিরুদ্ধে তাঁর ছয় বছর বয়সী ছেলে নোয়েল রদ্রিগেজ-আলভারেজকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। নোয়েল, যিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ছিলেন, তাঁকে শেষবার ২০২২ সালের অক্টোবরে দেখা গিয়েছিল। ২০২৩ সালের মার্চে টেক্সাসের এভারম্যানে কর্তৃপক্ষ নোয়েলের কল্যাণ পরীক্ষার জন্য একটি তদন্ত শুরু করে।

তদন্তকারীদের কাছে সিন্ডি মিথ্যা বলেন যে নোয়েল তাঁর জৈবিক পিতার সঙ্গে মেক্সিকোয় রয়েছে। কিন্তু দুই দিন পরেই তিনি তাঁর স্বামী আরশদীপ সিং এবং ছয়টি অন্যান্য শিশুর সঙ্গে ভারতে একটি ফ্লাইটে চড়ে পালিয়ে যান। নোয়েল সেই ফ্লাইটে ছিলেন না।

২০২৩ সালের অক্টোবরে টেক্সাসের একটি জেলা আদালতে সিন্ডির বিরুদ্ধে ‘ক্যাপিটাল মার্ডার অফ আ পার্সন আন্ডার টেন ইয়ার্স অফ এজ’ এবং ‘আনলফুল ফ্লাইট টু এভয়েড প্রসিকিউশন’ সহ একাধিক অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। এফবিআই জানিয়েছে, নোয়েলের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল, যার মধ্যে ছিল গুরুতর বিকাশজনিত সমস্যা, সামাজিক সমস্যা, হাড়ের ঘনত্বের সমস্যা এবং দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ।

তদন্তকারীরা এভারম্যানে তাঁদের ভাড়া বাড়ির একটি সদ্য ঢালা পোর্চের নিচে একটি ফেলে দেওয়া গালিচায় ক্যাডেভার কুকুরের সাহায্যে মানব দেহাবশেষের উপস্থিতির ইঙ্গিত পায়, যদিও কোনো শারীরিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

২০২৪ সালের অক্টোবরে সিন্ডির জন্য একটি ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করা হয় এবং ভারত সহ সকল সদস্য দেশে তা পাঠানো হয়। এছাড়াও, তাঁর প্রত্যর্পণের জন্য একটি প্যাকেজ জমা দেওয়া হয়। এফবিআই, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং ইন্টারপোলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সিন্ডিকে ভারতে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে তিনি টেক্সাস কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তরিত হয়েছেন, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলবে।

Advertisements

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। এফবিআই ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল বলেন, “এই গ্রেফতারি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।” সিন্ডির গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসার পর এটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

এক্স-এ পোস্টে অনেকে এই গ্রেফতারিকে ন্যায়বিচারের জয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।এই মামলাটি শিশু হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের প্রতি সমাজের সংবেদনশীলতা এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। নোয়েলের মৃতদেহ এখনও পাওয়া যায়নি, তবে তদন্তকারীরা আশা করছেন যে সিন্ডির গ্রেফতারির মাধ্যমে এই মামলার আরও তথ্য প্রকাশ্যে আসবে।

এই ঘটনা ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আইনি সহযোগিতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।সিন্ডি রদ্রিগেজ সিং-এর বিরুদ্ধে মামলা এখন টেক্সাসের আদালতে বিচারাধীন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি গুরুতর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন।

Google Pixel 10 সিরিজ ভারতে লঞ্চ হল, দাম, ক্যামেরা ও ব্যাটারির সব তথ্য দেখে নিন

এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী শিশু নিরাপত্তা এবং অপরাধীদের প্রত্যর্পণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এই মামলার ফলাফল আন্তর্জাতিক অপরাধ মোকাবিলায় আরও কঠোর পদক্ষেপের পথ প্রশস্ত করতে পারে।