কলকাতা: বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল। অনুপ্রবেশ ইস্যুতে দিনরাত রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেও সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্বীকার করেছে—বাংলাদেশ সীমান্তের বড় অংশ এখনও অরক্ষিত।
সীমান্ত কতটা অরক্ষিত?
কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী, ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০৯৬ কিমি। এর মধ্যে বাংলার অংশ ২২১৬.৭ কিমি। এর মধ্যেই ৫৬৯ কিমি এখনও বেড়াহীন অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে ১১২.৭৮ কিমি এলাকায় বনভূমি, ধসপ্রবণ পাহাড়ি জমি কিংবা দুর্গম ভৌগোলিক পরিস্থিতির কারণে কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব নয়। তবে বাকি প্রায় ৪৫৬ কিমি এলাকায় বেড়া বসানো সম্ভব হলেও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
রাজ্যসভায় লিখিত জবাবে বুধবার এই তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। তিনি জানান, বর্তমানে ৭৭.৯৩ কিমি এলাকায় বেড়ার কাজ চলছে। ২২৯.৩১ কিমির জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। আর বাকি ১৪৮.৯৭ কিমিতে এখনও জমি অধিগ্রহণই শুরু হয়নি।
অনুপ্রবেশের পরিসংখ্যান India Bangladesh border security
একইসঙ্গে অনুপ্রবেশ নিয়েও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে কেন্দ্র। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ৩,৯৬৪ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ধরা পড়েছেন ১,৫৪৭ জন, ২০২৪ সালে ১,৬৯৪ জন এবং চলতি বছরে (২০২৫ সালের অগস্ট পর্যন্ত) ৭২৩ জন। কেন্দ্রীয় তথ্য বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও সমস্যার গভীরতা এখনও উদ্বেগজনক।
দায় কার?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, বাংলার সীমান্তে ১ হাজার ৬৪৮ কিমি এলাকায় ইতিমধ্যেই বেড়া বসানো হলেও ৪৫৬ কিমি এলাকায় কাজ আটকে আছে মূলত জমি অধিগ্রহণ ও প্রশাসনিক জটিলতায়। এর মধ্যে প্রায় ১৪৮ কিমিতে জমি অধিগ্রহণ শুরুই হয়নি, যা নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য সরকারের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এত বড় অরক্ষিত এলাকা পড়ে থাকা মানেই কেন্দ্রও দায় এড়াতে পারে না।
রাজনৈতিক তাৎপর্য
অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বারবার রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে এসেছে বিজেপি নেতৃত্ব। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বাংলায় এসে এই প্রসঙ্গ তুলেছেন। কিন্তু এবার সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বিরোধী রাজনীতিকে নতুন হাতিয়ার দিল। শাসকদল ইতিমধ্যেই সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজে গড়িমসির দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়েছে। ফলে সীমান্ত সুরক্ষা ইস্যুতে রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Bharat: The Union Home Ministry revealed in Parliament that a significant portion of the West Bengal-Bangladesh border remains unfenced. The report details the extent of the un-fenced area, land acquisition delays, and the number of illegal immigrants apprehended.