পুলিশকে মারধরের অভিযোগে মহিলা-সহ গ্রেফতার ৭, চাঞ্চল্য খেজুরিতে

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি মহকুমা আবারও তীব্র চাঞ্চল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। অভিযোগ, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে তালপাটিঘাঠ উপকূলীয় থানার পুলিশ।…

পুলিশকে মারধরের অভিযোগে মহিলা-সহ গ্রেফতার ৭, চাঞ্চল্য খেজুরিতে

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি মহকুমা আবারও তীব্র চাঞ্চল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। অভিযোগ, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে তালপাটিঘাঠ উপকূলীয় থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে চারজন মহিলা রয়েছেন। ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন পুলিশকর্মী। বর্তমানে গোটা এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত শনিবার জন্মাষ্টমীর দিন খেজুরির নিজকসবা গ্রামে এক যুবক প্রকাশ্যে এক যুবতীকে জড়িয়ে ধরে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ঘিরে গ্রামে বসানো হয় সালিশি সভা। সেখানে উপস্থিত গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত যুবকের উপর মোটা অঙ্কের জরিমানা চাপায়। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক টাকা দিতে অস্বীকার করে। তখনই উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং সভাস্থলেই ওই যুবককে বেঁধে রেখে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

   

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তালপাটিঘাঠ উপকূলীয় থানার একদল পুলিশ। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্ত যুবককে গ্রামবাসীর হাত থেকে উদ্ধার করা। কিন্তু পুলিশ গ্রামে ঢুকতেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। অভিযোগ, উত্তেজিত গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর চড়াও হয় এবং তাঁদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন পুলিশকর্মী আহত হন। হঠাৎ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয়।

অবশেষে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী পৌঁছালে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে অভিযানে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়, যার মধ্যে চারজন মহিলা। গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের বুধবার কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালত শুনানিতে ধৃত পুরুষদের জামিনের আবেদন খারিজ করে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে মহিলা অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর।

Advertisements

এই ঘটনার পর গোটা নিজকসবা গ্রামে এখনও উত্তেজনা বজায় রয়েছে। গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলার মতো ঘটনা ভবিষ্যতে হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অভিযুক্ত যুবকের আচরণে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা উচিত হয়নি। অন্যদিকে, একাংশ গ্রামবাসীর অভিযোগ, পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে রক্ষা করার চেষ্টা করছিল, তাই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

খেজুরির এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হল গ্রামীণ স্তরে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা কতটা বিপজ্জনক রূপ নিতে পারে। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মহিলা-সহ সাতজনের গ্রেফতার অবশ্যই প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের প্রতিফলন। তবে ঘটনায় আহত পুলিশকর্মীদের সুস্থতা এবং গ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরানোই এখন পুলিশের প্রধান লক্ষ্য।