ধর্মতলা রো পশ্চিমের নাম বদলে অভিষেককে অভিনন্দন চন্দ্রচূড়ের

কলকাতার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এসপ্ল্যানেড রো পশ্চিমের নাম পরিবর্তন করে এখন জাস্টিস রাধাবিনোদ পাল সরণি নামকরণ করা হয়েছে (Abhishek)। এই উদ্যোগের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন…

Abhishek praised by chandrachur

কলকাতার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এসপ্ল্যানেড রো পশ্চিমের নাম পরিবর্তন করে এখন জাস্টিস রাধাবিনোদ পাল সরণি নামকরণ করা হয়েছে (Abhishek)। এই উদ্যোগের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উদ্যোগের জন্য অভিষেক কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রখ্যাত নেতাজী গবেষক চন্দ্রচূড় ঘোষ।

এই বছরের শুরুতে জাপানের টোকিওতে জাস্টিস রাধাবিনোদ পালের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় তাঁর পরিবারের একটি অনুরোধের প্রেক্ষিতে অভিষেক এই নামকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হওয়ায় বাংলার মানুষের মধ্যে গর্বের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়েছে।

   

জাস্টিস রাধাবিনোদ পাল (১৮৮৬-১৯৬৭) ছিলেন ভারতের একজন প্রখ্যাত বিচারপতি এবং আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক সামরিক ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ফার ইস্ট (টোকিও ট্রায়াল)-এ ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হন।

১১ জন বিচারপতির মধ্যে তিনিই একমাত্র ছিলেন যিনি সমস্ত অভিযুক্তদের নির্দোষ ঘোষণা করে একটি ঐতিহাসিক ভিন্নমত পোষণ করেন। তাঁর এই মতামত ‘বিজয়ীর ন্যায়বিচার’-এর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হয় এবং জাপানে তাঁকে একজন নায়ক হিসেবে সম্মান করা হয়। টোকিওর ইয়াসুকুনি শ্রাইনে তাঁর জন্য একটি স্মৃতিসৌধ রয়েছে, এবং ১৯৬৬ সালে জাপানের সম্রাট তাঁকে ‘অর্ডার অফ দ্য স্যাক্রেড ট্রেজার ফার্স্ট ক্লাস’-এর সম্মানে ভূষিত করেন।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি এই বছর জাপানে একটি সর্বদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে টোকিও সফর করেছিলেন, জাস্টিস পালের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি টোকিওর ইয়াসুকুনি শ্রাইনে জাস্টিস পালের স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

জাস্টিস পালের নাতি তাঁর দাদুর নামে কলকাতায় একটি রাস্তার নামকরণের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অভিষেক এই অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে কলকাতা পৌরসংস্থার মাধ্যমে এসপ্ল্যানেড রো পশ্চিমের নাম পরিবর্তন করে জাস্টিস রাধাবিনোদ পাল সরণি করার উদ্যোগ নেন। এই পদক্ষেপ বাংলার একজন মহান সন্তানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।

Advertisements

তিনি ভারতের আয়কর আইন, ১৯২২ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার সেলিমপুর গ্রামে, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গ প্রেসিডেন্সিতে। তাঁর জীবনের সংগ্রাম এবং অর্জন বাঙালি জাতির জন্য গর্বের বিষয়।

শেষ মুহূর্তে এশিয়া কাপ থেকে নাম তুলে নিল পাকিস্তান

এই নামকরণের মাধ্যমে কলকাতার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে সম্মান জানানো হল। এসপ্ল্যানেড এলাকা, যা কলকাতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, এখন জাস্টিস পালের নামে একটি রাস্তার মাধ্যমে তাঁর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করবে।

এই পদক্ষেপ ভারত-জাপান সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ জাস্টিস পালের ভিন্নমত জাপানের জনগণের কাছে ভারতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।