নন্দীগ্রাম ঘিরে তৃণমূলের নতুন কৌশল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা বৈঠকে বিশেষ বার্তা

কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই ফের নতুন ছন্দে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষ করে নন্দীগ্রামকে ঘিরে আলাদা পরিকল্পনা তৈরি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে…

abhishek speech in tokyo

কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই ফের নতুন ছন্দে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষ করে নন্দীগ্রামকে ঘিরে আলাদা পরিকল্পনা তৈরি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে জেলা-ওয়াড়ি বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—আগামী দিনে জনসংযোগই হবে প্রধান হাতিয়ার।

নন্দীগ্রাম বিধানসভা ঘিরে আলাদা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই কেন্দ্র নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। তৃণমূলের প্রতিটি ব্লক ও অঞ্চল নেতৃত্বকে মানুষের বাড়ি-বাড়ি পৌঁছাতে হবে।” সেই সঙ্গে অভিষেক স্পষ্ট বার্তা দেন, বুথে বুথে ছোট ছোট সভার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছনো ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।

   

অভিষেক বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “মানুষের অভাব-অভিযোগ মন দিয়ে শুনতে হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সবাই পাচ্ছেন কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্পে সাংসদ, বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের সরাসরি থাকতে হবে।”

বৈঠকে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিক উঠে আসে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ও বাঙালিদের উপর যে অত্যাচার চলছে, তার বিরুদ্ধে সরব হতে হবে—এমন নির্দেশ দেন অভিষেক। তিনি বলেন, “মানুষকে বোঝাতে হবে বাংলার উন্নয়ন কীভাবে হচ্ছে এবং বিজেপি কিভাবে শুধু বিভাজনের রাজনীতি করছে।”

এই বৈঠকে বারাসত সাংগঠনিক জেলা থেকে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ ও জেলা সভাপতি ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নারায়ণ গোস্বামী, রহিমা মণ্ডল, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, তাপস চট্টোপাধ্যায়, আইএনটিটিইউসি’র সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত, যুব তৃণমূলের সভাপতি লিঙ্কন মল্লিক ও মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মিনু দাস চক্রবর্তী।

Advertisements

অন্যদিকে, তমলুক সংগঠনিক জেলার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি সুজিত রায়, চেয়ারম্যান অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, সৌমেন মহাপাত্র, তিলক চক্রবর্তী, সুকুমার দে, তাপসী মণ্ডল, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ দে, মহিলা তৃণমূলের সভাপতি শিবানী দে কুণ্ডু এবং পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমান।

এই বৈঠকে টাউন ও ব্লক সভাপতিদের দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সাংগঠনিক রদবদল হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। অভিষেকের স্পষ্ট বক্তব্য—“সবাইকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। লোকসভায় ফল ভালো হয়নি, কিন্তু বিধানসভা লড়াইয়ে সব দিক থেকে বিজেপিকে মোকাবিলা করতে হবে।”

নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক কৌশল ও সংগঠনের খুঁটিনাটি পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রতিটি বুথে, প্রতিটি অঞ্চলে দলকে শক্তিশালী করার ডাক দিলেন তিনি।