কবে থেকে আবার শুরু হবে ই-প্যান পরিষেবা? আয়কর দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি জারি

আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং পোর্টালে সম্প্রতি জারি হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি। সেখানে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট ২০২৫ রাত ১২টা থেকে ১৯…

PAN card

আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং পোর্টালে সম্প্রতি জারি হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি। সেখানে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য আগামী ১৭ আগস্ট ২০২৫ রাত ১২টা থেকে ১৯ আগস্ট ২০২৫ রাত ১২টা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করদাতারা নতুন ই-প্যান তৈরি করতে পারবেন না। তবে এই সময়ে অন্যান্য পরিষেবা স্বাভাবিকভাবেই চালু থাকবে।

ই-প্যান বা ইলেকট্রনিক প্যান আসলে স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর (Permanent Account Number) যা একটি পিডিএফ ফরম্যাটে ই-মেইলের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। সাধারণ প্যান কার্ডের মতোই এর বৈধতা রয়েছে। পার্থক্য শুধু এটুকু যে, এখানে কোনো ফিজিক্যাল কার্ড ডাকযোগে পাঠানো হয় না। আবেদনকারীর প্যান ফর্মে দেওয়া ই-মেইল আইডিতেই ই-প্যান পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এটি দ্রুত, সহজ ও সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়া।

   

ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান ব্যবস্থা চালু করেছে আয়কর দপ্তর, যাতে আবেদনকারীকে আলাদা করে কাগজপত্র জমা দিতে না হয়। আবেদনকারী যদি আগে কখনও প্যান না নিয়ে থাকেন, তবে আধার নম্বর ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যেই ই-প্যান তৈরি করা যায়। আধার ও মোবাইল নম্বর অবশ্যই পরস্পর সংযুক্ত থাকতে হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হয় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবেদনকারীর নিবন্ধিত ই-মেইলে পিডিএফ আকারে পৌঁছে যায় নতুন ই-প্যান।

ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পাওয়ার জন্য কী কী শর্ত রয়েছে?

আয়কর দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পেতে হলে কয়েকটি পূর্বশর্ত মানতে হবে—

1. আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক ও ব্যক্তি হতে হবে, যিনি আগে কখনও প্যান পাননি।
2. আবেদনকারীর একটি বৈধ আধার থাকতে হবে এবং সেটির সঙ্গে একটি সক্রিয় মোবাইল নম্বর যুক্ত থাকতে হবে।
3. আবেদনকারীকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে; নাবালক হলে তিনি এই সুবিধা পাবেন না।
4. আবেদনকারী ‘Representative Assessee’ (আয়কর আইন ধারা ১৬০ অনুসারে) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকলে ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পাওয়া যাবে না।

আজকের দিনে প্যান নম্বর ছাড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ প্রায় অসম্ভব। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় প্যান নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, উচ্চমূল্যের লেনদেন, সম্পত্তি কেনা-বেচা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি ও আর্থিক ক্ষেত্রে প্যান অপরিহার্য।

Advertisements

যাঁদের এখনও প্যান নেই, তাঁদের জন্য ই-প্যান একটি সহজ সমাধান। আধার ও মোবাইল নম্বর থাকলেই বিনামূল্যে ই-প্যান তৈরি করা যায়। কোনো জটিল ফর্ম পূরণ করার প্রয়োজন নেই। তাই নতুন করদাতাদের জন্য এটি একদিকে যেমন দ্রুত সমাধান, অন্যদিকে সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্ত ব্যবস্থা।

যেহেতু এই ৪৮ ঘণ্টা ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পরিষেবা বন্ধ থাকবে, তাই যাঁরা নতুন করে প্যান তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের কিছুটা সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে ব্যবসায়ী বা নতুন চাকরিজীবীরা, যাঁদের তড়িঘড়ি প্যান নম্বর প্রয়োজন, তাঁদের অপেক্ষা করতে হবে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। তবে আয়কর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অস্থায়ী বিরতি। নির্ধারিত সময়ের পর পরিষেবা স্বাভাবিকভাবেই চালু হবে।

ই-ফাইলিং পোর্টাল এখন কোটি কোটি করদাতার জন্য একমাত্র ভরসা। ফলে সময়ে সময়ে প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। সার্ভার আপডেট, নিরাপত্তা জোরদার, এবং প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করার জন্য এমন পদক্ষেপ নিতেই হয়। যদিও এর ফলে অল্প সময়ের জন্য ভোগান্তি হয়, তবে দীর্ঘমেয়াদে করদাতারই সুবিধা হবে।

আয়কর দপ্তর করদাতাদের উদ্দেশে জানিয়েছে, যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে প্যান প্রয়োজন, তাঁরা যেন ১৭ আগস্টের আগে পরিষেবা ব্যবহার করেন। অন্যথায় ১৯ আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি যাঁদের ইতিমধ্যেই প্যান রয়েছে, তাঁদের কোনো প্রকার উদ্বেগের কারণ নেই। এই বিরতি শুধুমাত্র নতুন ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান তৈরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ভারত সরকারের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অন্যতম সফল পদক্ষেপ হল ই-প্যান ও ইনস্ট্যান্ট ই-প্যান পরিষেবা। মাত্র কয়েক মিনিটে একটি সরকারি পরিচয়পত্র তৈরি হওয়া একসময় ছিল অকল্পনীয়। তবে প্রযুক্তিগত সুবিধা বজায় রাখতে এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঝেমধ্যে এমন রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। করদাতারা কিছুটা ধৈর্য ধরলেই আবার স্বাভাবিক পরিষেবার সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।