আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ (Womens Cricket Team) ২০২৫-এর জন্য ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল ঘোষণা করা হয়েছে। নীতু ডেভিডের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিটি ১৯ আগস্ট, ২০২৫-এ মুম্বাইয়ে এই ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করে। হরমনপ্রীত কৌর দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন, এবং স্মৃতি মান্ধানা থাকবেন সহ-অধিনায়ক।
দলে রয়েছেন প্রতীকা রাওয়াল, হারলিন দেওল, দীপ্তি শর্মা, জেমিমা রড্রিগেস, রেণুকা সিং ঠাকুর, অরুন্ধতী রেড্ডি, রিচা ঘোষ (উইকেটরক্ষক), ক্রান্তি গৌড়, আমানজোত কৌর, রাধা যাদব, শ্রী চরণী, ইয়াস্তিকা ভাটিয়া (উইকেটরক্ষক) এবং স্নেহ রানা।
তবে, শাফালি বর্মার দলে না থাকা বড় চমক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই বিশ্বকাপ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় শুরু হবে, এবং ভারত তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইনআপে অভিজ্ঞ এবং তরুণ প্রতিভার মিশ্রণ রয়েছে। স্মৃতি মান্ধানা এবং প্রতীকা রাওয়াল ওপেনিং করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতীকা গত বছর থেকে ১৪ ইনিংসে ৭০৩ রান সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে পাঁচটি অর্ধশতরান এবং একটি শতরান রয়েছে। তাঁর গড় ৫৪.০৭, যা তাঁকে শীর্ষস্থানীয় ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
হারলিন দেওল নম্বর তিনে ব্যাট করবেন, যিনি ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাম্প্রতিক ম্যাচে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। মিডল অর্ডারে হরমনপ্রীত কৌর, জেমিমা রড্রিগেস এবং রিচা ঘোষ দলের মূল শক্তি।
রিচা ঘোষ প্রথম পছন্দের উইকেটরক্ষক হিসেবে খেলবেন, এবং ইয়াস্তিকা ভাটিয়া থাকবেন ব্যাকআপ উইকেটরক্ষক হিসেবে। ইয়াস্তিকা অস্ট্রেলিয়া এ-এর বিপক্ষে তিন ম্যাচে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। দীপ্তি শর্মা মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তাঁর অফ-স্পিন দিয়ে দলের ভারসাম্য বজায় রাখবেন।
ভারতের বোলিং আক্রমণে পেস এবং স্পিনের ভারসাম্য রয়েছে। পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন রেণুকা সিং ঠাকুর, যিনি ডব্লিউপিএল ২০২৫-এর পর থেকে পিঠের চোট থেকে সেরে উঠেছেন। তবে, তাঁর ফিটনেস নিয়ে এখনও কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে। ক্রান্তি গৌড়, যিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেট নিয়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন, দ্বিতীয় পেসার হিসেবে দলে জায়গা পেয়েছেন।
অরুন্ধতী রেড্ডি এবং আমানজোত কৌর পেস-বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে দলে রয়েছেন। আমানজোতের পিঠের চোট নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও, তিনি দলে জায়গা ধরে রেখেছেন। স্পিন বিভাগে দীপ্তি শর্মা, স্নেহ রানা, রাধা যাদব এবং শ্রী চরণী শক্তিশালী আক্রমণ গড়ে তুলেছেন। রাধা যাদব তাঁর বাঁহাতি স্পিন এবং দুর্দান্ত ফিল্ডিং দিয়ে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শ্রী চরণী ৮টি ওডিআই ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে তাঁর সম্ভাবনা প্রমাণ করেছেন।
দলে শাফালি বর্মার না থাকা বড় চমক। তিনি ডব্লিউপিএল ২০২৫-এ ৩০৪ রান সংগ্রহ করলেও, অস্ট্রেলিয়া এ-এর বিপক্ষে ওডিআই ম্যাচে তাঁর রান ছিল ৫২, ৪ এবং ৩৬। ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তিনি ধারাবাহিক পারফর্ম করতে পারেননি।
প্রধান কোচ আমল মুজুমদার শাফালির বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনার কথা বললেও, নির্বাচকরা তাঁর পরিবর্তে প্রতীকা রাওয়ালের উপর ভরসা রেখেছেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আইসিসি মহিলা ওডিআই বিশ্বকাপ ২০২৫ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে। ভারত গ্রুপে শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবে। ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা এবং সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে ভারত শিরোপার অন্যতম দাবিদার।
গত ১১টি ওডিআই ম্যাচের মধ্যে ৯টিতে জয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ সিরিজ জয় এবং শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় ভারতের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। হরমনপ্রীত বলেছেন, “ঘরের মাঠে আমাদের সমর্থকদের সামনে খেলা বিশেষ অভিজ্ঞতা হবে। আমরা শিরোপা জিতে ভক্তদের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।”
বিশ্বকাপের আগে ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলবে, যা দলের প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজে রেণুকা এবং আমানজোতের ফিটনেস পরীক্ষা করা হবে। নির্বাচকরা সায়ালি সাটঘরেকে দলে রেখেছেন, যিনি ইংল্যান্ড সফরে ভালো পারফর্ম করেছেন।
ডায়মন্ড হারবার ম্যাচের আগে কার্ড সমস্যা ভাবাচ্ছে লাল-হলুদকে
হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে ভারতীয় দল এবার প্রথমবারের মতো ওডিআই বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে নামছে। স্মৃতি মান্ধানার দুর্দান্ত ফর্ম, দীপ্তি শর্মার অলরাউন্ড দক্ষতা এবং ক্রান্তি গৌড়ের মতো তরুণ প্রতিভার সমন্বয়ে দলটি শক্তিশালী। তবে, শাফালির বাদ পড়া এবং রেণুকার ফিটনেস নিয়ে উদ্বেগ দলের চ্যালেঞ্জ। ঘরের মাঠে ভক্তদের সমর্থন নিয়ে ভারত কীভাবে পারফর্ম করে, তা দেখার জন্য ক্রিকেটপ্রেমীরা মুখিয়ে রয়েছেন।