Soumitrisha Kundu Interview: প্রেম-বিয়ে-উচ্ছেবাবুর সঙ্গে সম্পর্ক- খুল্লামখুল্লা অড্ডায় সৌমিতৃষা কুন্ডু

‘কিছুটা দুষ্টু সে চিনি চিনি। আর ভীষণ মিষ্টি তাকে চিনি চিনি। নাম তার মিঠাই’। সন্ধ্যা নামলেই ঘরে ঘরে রাজত্ব করছে মিঠাই। কিন্তু পর্দার বাইরে আদতে…

Soumitrisha Kundu

‘কিছুটা দুষ্টু সে চিনি চিনি। আর ভীষণ মিষ্টি তাকে চিনি চিনি। নাম তার মিঠাই’। সন্ধ্যা নামলেই ঘরে ঘরে রাজত্ব করছে মিঠাই। কিন্তু পর্দার বাইরে আদতে সে কেমন তাই নিয়েই আমাদের প্রতিনিধির সঙ্গে আড্ডায় সৌমিতৃষা কুন্ডু। ( Soumitrisha Kundu )

১. প্রথমেই জানতে চাইব ‘টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড’-এ সেরা অভিনেত্রীর সম্মান পেয়ে কেমন লাগছে?
মিঠাই-এর ভাষায় খুবববব হেপ্যি। এতো বড় একটা প্রেস্টিজিয়াস সম্মান তাও আবার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পেয়েছি। এর থেকে ভাল লাগা আর কিছু হতে পারে না।

২. ‘মিঠাই’য়ের অফার পাওয়ার সময় ভেবেছিলেন এতটা সফলতা পাবেন?
সত্যি বলব, কখনও ভাবিনি। গল্পটা ভালো লেগেছিল ভেবেছিলাম দর্শকদের পছন্দ হবে। এছাড়া মনে হয়েছিল গতানুগতিক ধারাবাহিক থেকে আলাদা, মিষ্টি নিয়ে বাঙালিয়ানা নিয়ে ইউনিক স্টোরি। তবে প্রথমদিন থেকেই দর্শকরা যেভাবে ভালবাসা দিয়েছেন এক্কেবারে অবিশ্বাস্য। প্রায়ই কেউ না কেউ সেটে আসেন দেখা করতে। এতো ভালোবাসা পাব, এটা একদমই ভাবিনি।

‘আমার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যোমকেশ বক্সীর একটা ছাপ রয়েছে’ 

৩. এক টানা টিআরপি-তে এক নম্বরে ছিল ‘মিঠাই’, এখন সেই স্থানটা নেই। টিআরপির লড়াইয়ের চাপটা কী অনুভব করেন?
এক নম্বর থেকে সরে গেলাম মানেই হেরে যাওয়া নয়। দর্শকের ভালোবাসাটাই আসল। নম্বর তো পাল্টেই যায়। তাছাড়া প্রত্যেকেই আমরা নিজের জায়গায় এক নম্বর। আমি গোপালে বিশ্বাস করি। আমি যা চাই, ঈশ্বর আমায় দিয়েছেন। যা দেননি, তার থেকে বেশি কিছুই আমি পেয়েছি। আবার অনেক সময় মনে হয়েছে, গোপাল আমায় বঞ্চিত করল। পরে বুঝেছি ওটা আমার জন্য ছিলই না। তাই সেই ঈশ্বরকে ডেকেই একের পর এক সপ্তাহ এগোচ্ছি৷

৪. সৌমিতৃষাও ( Soumitrisha Kundoo ) গোপালে বিশ্বাস করে? তাহলে বলতে পারি মিঠাই আর সৌমিতৃষা অনেকটাই একরকম?
মিল তো রয়েইছে সঙ্গে অমিলও প্রচুর। তবে মিলের পাল্লাটাই ভারী। যেমন মিঠাইয়ের মতো আমিও খুব পজিটিভ ও হাসিখুশি থাকতে ভালোবাসি। কোনও কিছু হবে না বললেও, সেটা করে দেখানোর চেষ্টা করি। মিঠাইয়ের মতোই আমার ইগো, মাথা গরম তো আছেই। সেই সঙ্গে মিঠাই যেমন সবার জন্যে ভাবে, আমিও তেমন। তবে মিঠাই যেমন আগেই ভুল স্বীকার করে নেয়, ‘সরি’ বলে, ক্ষমা চায় আমি একেবারে তেমন নই। সত্যি বলতে ‘‘আমি কাউকে সরি বলতে পারি না। তবে কোথাও ‘সরি’ বলার দরকার হলে গলার টোনটা একটু চেঞ্জ হয়। এর বেশি কিছু না, তাতেই বুঝে নিতে হবে (হাসি) । তাছাড়া মিঠাইয়ের মতো কথায় কথায় চোখে জলও আসে না আমার। খুব কষ্ট হলেও কারও সামনে আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল বেরবে না। আমার অনুভূতিগুলো খুব গোপনে থাকে। বন্ধ দরজার পিছনে। হয়তো খুব বেশি হলে চোখটা একটু লাল হয়ে উঠল। ব্যাস ওইটুকুই। আর হ্যাঁ, মিঠাইয়ের মতোই আমি এক্কেবারে অগোছালো। বাড়িতেও মা সব গোছায়।

অনুরাগ সঙ্গে প্রেম, আমার অ্যাকচুয়াল বয়ফ্রেন্ড শুনলে রাগ করবে 

৫. মিঠাই তো এতো ভাল রান্না করে সৌমিতৃষাও কি তাই?
এই না একদমই না। আমি গ্যাস জ্বালাতেও শিখিনি। মা খুব ভয় পান। যখন রান্নার সিন থাকে। যদিও সবাই বলে, দেখিয়ে শিখিয়ে দেয়। তবে হ্যাঁ ইনডাকশনে একবার পাটিসাপটা ভেজেছিলাম, একটাও ভাঙেনি। যদিও মা পাশে ছিল দাঁড়িয়ে। সবাই বলেছিল ভালোই হয়েছে খেতে।

৬. মিঠাই-এর নতুন প্রমোতে দেখা যাচ্ছে সিডের অ্যাকসিডেন্ট আর তারপর রকস্টার রূপে ব্যপারটা কি? সিডের ডবল রোল নাকি ছদ্মবেশে সিডই?
মিঠাই একটু বেশি কথা বলে তবে সৌমিতৃষা কিন্তু নয় (হাসি)। বিষয়টা কি হচ্ছে তা জানার জন্য তো দেখতে হবে ‘মিঠাই’। নতুন চমক বুঝলেন।

৭. মিঠাই তো উচ্ছেবাবুর প্রেমে হাবু্ডুবু খাচ্ছে। আর সৌমিতৃষা? ( Soumitrisha Kundoo )
সৌমিতৃষা পুরোপুরি সিঙ্গল! ডেটিংয়ে বিশ্বাস করি না। আবার এখনও পর্যন্ত মনের মতো মানুষ পায়নি। আমি ভীষণই ওল্ড স্কুল। তাই মনের মানুষ পেলে সোজা এনগেজমেন্ট করব। তারপর ৮-১০বছর পর বিয়ে করব।

৮. মিঠাই-এর মনের মানুষ হতে গেলে তাঁর কি কি গুন থাকতে হবে।
আমার মতো চাই। উচ্ছে বাবু টাইপ চলবে না। আমার চোখ দেখে বুঝতে হবে আমি অভিমান করেছি, রাগ করেছি। আমি খুবই রাগী তো। কিন্তু সেগুলোর পিছনে ভালোবাসা আছে, সেটা বুঝতে হবে। কে জানে কীভাবে পাব। দেখা গেল হয়ত অ্যাসকিডেন্ট (এই ভাষায় মিঠাই কথা বলে) হয়ে ধাক্কা লেগে মনের মানুষের সঙ্গে দেখা হয় গেল। গোপালের দয়ায়।

৯. উচ্ছেবাবু মানে অদৃতের সঙ্গে বাস্তবে কেমন সম্পর্ক?
ও বাবা, পুরো টম অ্যান্ড জেরি। একেবারে চরিত্র দুটোর মতোই। সারাক্ষণ ঝগড়া করছি, একে অপরকে সেটেও অপমান করছি। কিছুদিন আগেই আমায় কী একটা বলল, এত মাথা গরম হয়েছিল যে হাতুরি নিয়ে তেড়ে গিয়েছিলাম মারব বলে! কোনদিন আপনাদের খবর করতে হবে যে নায়িকার হাতে নিহত নায়ক! (খুব হাসি) আর আজকাল নিজে নিজে স্ক্রিপ্ট তৈরি করে। আমাকে রাগানোর সিন গুলোতে এমন অনেক কথা বলে যা স্ক্রিপ্টে লেখাই থাকে না। তাই যখন এমন সিন থাকে আমি একবার ওর স্ক্রিপ্ট চেক করে নিই।
মিমি চক্রবর্তীর প্রিয় খাবার সঙ্গে রেসিপি

Advertisements

১০. ছোটবেলার কেমন ছিল?
ছোটবেলা বারাসতে কেটেছে। বাবা-মায়ের একমাত্র আদুরে মেয়ে আমি। ছোটবেলা থেকে খুব দুষ্টু কিনা তাই মা ভয়ে কিছু করতে দেয় না। এমন কি গ্যাসও দেন না। কারণ যদি আগুন ধরিয়ে দি! আসলে এখনও তো মা আমায় খাইয়ে দেন ছোট বাচ্চাদের মতো। আমার নিজে হাতে খেতে ভালো লাগে না। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরনোর আগে মা খাইয়ে দেন।

১১. দিনের শিডিউলটা কেমন?
খুব ব্যস্ততার মধ্যে কাটে। সকাল ৭টায় থাকে কল টাইম। যদি কখনও ৮টায় কল টাইম থাকে তাহলে সকালে একটু বেশি সময় পাই ঘুমোনের। প্যাক আপ হয় প্রায় রাত ৮। আর মিঠাইয়ের চরিত্রটা যেহেতু খুব চনমনে তাই সবসময় খুব এনার্জি ধরে রাখতে হয়। কখনও যদিও একটু ক্লান্তির ছাপ পড়ে তাহলে সকলে প্রশ্ন করেন। ফলে আমি চেষ্টা করি বাড়ি ফিরে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে। খুব ধকল পড়ে।

১২. অভিনয় জগতে কীভাবে এলেন?
আমি না কোনওদিন অভিনেত্রী হতেই চাইনি। ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল কোরিওগ্রাফার হব, বম্বে যাব। ফ্যাশন ডিজাইনিং করব। সেই স্বপ্নের পথেই নাচ শিখতে কলকাতায় আসা। তারপর একটা সূত্রে মডেলিং শুরু করি। সেখান থেকে একটি চ্যানেলের আমাকে পছন্দ হয় নেগেটিভ রোলের জন্য। কিন্তু আমি একদমই জানতাম না কী করব। আমার নিজের উপর কোনও আত্মবিশ্বাসই ছিল না। কিন্তু ওঁরা ততটাই কনফিডেন্ট ছিল। পরে মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে শুরু করি। ২০১৭ সালে অডিশন ছাড়াই খুব অদ্ভুত ভাবে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে একের পর এক চলছে।

১৩. ভিলেন থেকে সোজা নায়িকা দারুন লাকি বলতেই হবে
তা একটু। তবে যখন অভিনয় শুরু করেছিলাম তখন নায়িকা হব এটা ভাবিনি। তবে নিজেকে প্রমাণ করার একটা জেদ ছিল। ভালো অভিনেত্রী হওয়ার তাগিদ রয়েছে। তাই দিনের পর দিন নিজেকে গ্রুমিং করেছি। আমার কাজ দেখে আমাকে অনেকেই বলত এবার হিরোইনের জন্য চেষ্টা কর। তুই পারবি। তখন ভাবলাম ঠিক আছে, এর পর সান বাংলা থেকে কনে বউয়ের অফার আসে হিরোইন হিসেবে। তার পর মিঠাই।

১৪. মিঠাই-এর উচ্ছেবাবুর ওপর ক্রাশ কিন্তু সৌমিতৃষার কার ওপর চাপ রয়েছে
শাহরুখ খান , হৃতিক রোশন।

১৫. ওয়েব সিরিজে কাজ করবেন না?
ইচ্ছে তো আছে। ভালো ভালো গল্প ও ফাটিয়ে অভিনয় করার সুযোগ পেলেই করব, বিদ্যা বালনের মতো। আপাতত মন দিয়ে মিঠাই।

১৬. বড়পর্দায় কোনও অফার আছে
একটা অফারও এসেছিল ছবির, কিন্তু আমার বয়সটা কম হয়ে যাচ্ছিল বলে হয়নি।